সোমনাথ মিত্র, তারকেশ্বর: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এখনও চলে যায়নি। এরমধ্যেই তৃতীয় ঢেউ যে আসন্ন তা বিশেষজ্ঞরা বার বার বলছেন।
আর সেই কথা মাথায় রেখে, লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত এড়াতে তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলার উপর একগুচ্ছ বিধিনিষেধ আরোপ করলেন তারকেশ্বর মন্দিরের মঠাধীশ দণ্ডী স্বামী সুরেশ্বর আশ্রম মহন্ত মহারাজ।
শ্রাবণী মেলা উপলক্ষে যে জলযাত্রা বা বাঁকযাত্রার আয়োজিত হয়, তা আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। তবে যথারীতি মন্দির খোলা থাকবে পুণ্যার্থীদের জন্য। বাড়ানো হচ্ছে মন্দিরে প্রবেশের সময়সীমা। জারি থাকছে করোনা সম্পর্কিত সমস্ত বিধিনিষেধ।
করোনা সংক্রমণের জন্য গত বছরও বন্ধ ছিল তারকেশ্বর মন্দিরের শ্রাবণী মেলা ও জলযাত্রা। এমনকী, মন্দিরও সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এবারে মন্দির খোলা থাকছে।
মেলা এক প্রকার বন্ধই থাকছে। কাঁধে বাঁকে করে জল নিয়ে আসা যাবে না মন্দিরে। বর্তমানে যেভাবে ভক্তরা এসে মন্দিরে প্রবেশ করে পূজো দিচ্ছেন, সেভাবেই ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।
তবে মন্দিরে প্রবেশের সময়সীমা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। আগে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত খোলা থাকত মন্দির। এবার থেকে ভোর ৫.৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে মন্দিরের দরজা।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১, ২ ও ৪ নম্বর গেট দিতে ভক্তদের প্রবেশ করতে হবে এবং ৫ ও ৬ নম্বর গেট দিয়ে বাইরে বের হতে হবে।
একসঙ্গে ২০০ জনের বেশি ভক্ত একসঙ্গে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তাঁদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মন্দির খোলা থাকলেও বন্ধ থাকছে মন্দিরের গর্ভগৃহ। ফলত, চোঙাতেই জল ঢালতে হবে ভক্তদের।
তারকেশ্বর মন্দিরের মঠাধীশ মহন্ত মহারাজ জানান, মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রশাসনিক স্তরে চিঠি দিয়ে এই সিন্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে যে, জেলার অন্য কোনও শিব মন্দিরে যেন জলযাত্রা বা বাঁকযাত্রা না আয়োজন করা হয়।
যদি হয়, সেক্ষেত্রে তারকেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও জলযাত্রার অনুমতি দেবে। প্রয়োজনে মন্দিরের গেটে যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন মহন্ত মহারাজ।
তারকেশ্বর পৌরসভার প্রশাসক স্বপন সামন্ত বলেন, আগে যেভাবে 'ভোলেবাবা পার করেগা...' বলে লক্ষ লক্ষ মানুষ জল নিয়ে আসতেন শ্রাবণী মেলা উপলক্ষে তা বন্ধ রাখা হয়েছে।
সেক্ষেত্রে কিছু মানুষের অসুবিধা হবে, তা সত্ত্বেও করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখেই সেই সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, ভক্তদের করোনা পরীক্ষা করার যে কথা মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তা সর্বস্তরে আলোচনা করে দেখা হচ্ছে।