সুদীপ চক্রবর্তী, হেমতাবাদ: ঠিক এক বছর আগে, বলা ভালো, ২০২০ সালের ১৩ জুলাই উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের তত্‍কালীন বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। 


বাড়ি থেকে ১ কিলোমিটার দূরে বালিয়া মোড় এলাকায় একটি বন্ধ দোকানের সামনে থেকে দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।   ঘটনার পরই খুনের অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হয় বিজেপি ও মৃতের পরিবার।  


এক বছর পরও একই দাবিতে সরব বিজেপি।  মৃতের স্ত্রীর দাবি, উপযুক্ত তদন্ত করে সত্যিটা সামনে আনুক সরকার। চাঁদিমা রায় বলেন, উপযুক্ত তদন্ত করে রাজ্য সরকার সঠিক বিচার করুক। উত্তর দিনাজপুর বিজেপি জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, দেবেন রায়ের পরিবার কোনও বিচার পায়নি।


যদিও তৃণমূলের দাবি, ঘটনায় যথাযথ তদন্ত করেছে সিআইডি।  জেলার তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। তদন্ত চলছে। বিচার পাবে পরিবার। যে কোনও মৃত্যু নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করে।


হেমতাবাদের ঘটনার তদন্ত করে সিআইডি।  গ্রেফতার করা হয় ২ জনকে। ঘটনার দু’মাসের মাথায়, রায়গঞ্জ আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিআইডি।


সূত্রের খবর, চার্জশিটে ধৃত মামুদ আলি ও নিলয় সিংয়ের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়।    


পাশাপাশি, মৃতদেহ উদ্ধারের দিনই উত্তর দিনাজপুরের তত্‍কালীন পুলিশ সুপার সুমিত কুমার দাবি করেছিলেন, দেবেন্দ্রনাথ আত্মঘাতী হয়েছেন।  হেমতাবাদ থানার পুলিশও দাবি করে, মৃতের পকেট থেকে মিলেছে সুইসাইড নোট। 


অর্থাত্‍, বিজেপি সিবিআই তদন্ত দাবি করলেও  সিআইডি বা পুলিশ আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করেছে।  এই নিয়ে জলঘোলার মধ্যে মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়কের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতাদের দেখা না যাওয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।


২০২১-এর  বিধাসভা নির্বাচনে হেমতাবাদ কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে পরাজিত হন দেবেন্দ্রনাথের স্ত্রী চাঁদিমা রায়। জয়ী হন তৃণমূলের সত্যজিত্‍ বর্মন।  ২০১৬-য় এই আসনে সিপিএমের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন দেবেন্দ্রনাথ। ২০১৯-এ তিনি যোগ দেন বিজেপিতে।