সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু। হুগলির ডানকুনিতে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠল চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ। উল্টোদিকে মৃতের পরিজনদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের মারধরে অভিযোগ কর্তৃপক্ষের। 


বুধবার দুপুরে রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, ৩ দিনেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সব শেষ। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হল রোগীর। কাঠগড়ায় হুগলির বেসরকারি হাসপাতাল সেভেন রেঞ্জার্স। 


মৃত দেবকুমার নন্দী, ডানকুনির সুভাষপল্লির বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, বুধবার প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দুপুরে ভর্তি করা হয় সেভেন রেঞ্জার্স হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় ৫১ বছরের ওই ব্যক্তির।


চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে, হাসপাতালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের আত্মীয়রা। মৃতের আত্মীয় পলাশ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওনাকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। সেখানে যে কেউ ঢুকতে পারেন না। কিন্তু যে কেউ ঢুকে পড়ছিলেন। চিকিৎসাই হয়নি। হাসপাতাল যেন বন্ধ করে দেয়।


সেভেন রেঞ্জার্স হাসপাতালেপ চিকিৎসক ও ডিরেক্টর শুভাশিস সাহা জানিয়েছেন, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। রোগীকে যখন আনা হয় তখন বমি করছিল। হাই প্রেসার ছিল। তারপর তাকে ওষুধ দেওয়া হয়। হঠাৎ হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। রোগীর পরিজন চিকিৎসক ও নার্সিংহোম কর্মীদের মারধোর করে।


পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে দুই পক্ষই। চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ জানিয়েছে মৃতের পরিবার। চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের মারধরের পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। এ দিন জোড়াবাগানকাণ্ডে আহত যুবকের মৃত্যু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার গভীর রাতে স্টোনম্যানের কায়দায় ওই যুবকের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে পালায় হামলাকারী। গুরুতর আহত ওই যুবক ভর্তি ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই চিকিত্‍সায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়রা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ মানতে নারাজ। 


হাসপাতালে আহত যুবকের ঠিকমতো চিকিত্‍সা হচ্ছে না। এই মর্মে লিখিত অভিযোগও জানায় তাঁর পরিবার। মৃত যুবক ওমপ্রকাশ শর্মার মা জানিয়েছেন, পরে ওকে এসএসডি বিল্ডিংয়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধে ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় যুবকের। এর পরই চিকিত্‍সায় গাফিলতির অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের আত্মীয়রা।  


যদিও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, 'যা যা করার ছিল, করা হয়েছে কিন্তু অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল অবস্থা। রোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ জানানোর পর তাঁর চিকিৎসা করে হাসপাতালের ৫ সদস্যের টিম। পরিস্থিতি বুঝে শিফট করানো হয় এসএসডি বিল্ডিংয়ে। এতে চিকিত্‍সায় গাফিলতির মতো কিছু হয়নি। '