সুনীত হালদার, হাওড়া : উদয়নারায়নপুরের বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। রবিবার রাতের পর বেশ কিছু অঞ্চলে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করে।
উদয়নারায়ণপুর ও আমতায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গতকাল ডিভিসি থেকে ফের জল ছাড়ায় বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। উদয়নারায়ণপুরের একাধিক জায়গায় দামোদরের বাঁধ উপচে জল ঢুকছে গ্রামে। বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি জলমগ্ন। উদয়নারায়ণপুরের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৮০টা গ্রাম জলের তলায়। আমতা থেকে উদয়নারায়ণপুরে যাওয়ার রাস্তা ভেসে গিয়েছে। উদয়নারায়ণপুরে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে ইতিমধ্যে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমতা ২ নম্বর ব্লকে দ্বীপ অঞ্চল ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
শনিবারই ডিভিসির ছাড়ার জন্য জলে ভাসে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতার বিস্তীর্ণ এলাকা। উদয়নারায়ণপুরের হরিহরপুর, টোকাপুর শিবানীপুর, হোদোল, কুরচি - এই ৫টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে দামোদরের জল ঢুকতে শুরু করে গ্রামে। উদয়নারায়ণপুর -তারকেশ্বর রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে হু হু করে বইতে থাকে জল। জলের তোড়ও ছিল ভয়াবহ। এর ফলে হাওড়া ও হুগলির মধ্যে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জলমগ্ন উদয়নারায়ণপুর হাসপাতাল ও কলেজ। আমতা ও উদয়নারায়ণপুরে উদ্ধারকাজে নেমেছে NDRF ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
শুধু হাওড়া হয়, বিভিন্ন জেলাতেই একইরকম জলযন্ত্রণার ছবি। রূপনারায়ণ ও দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত হুগলির খানাকুলের একাধিক গ্রাম। উদ্ধারকাজে নামে বায়ুসেন। জলের স্রোত অতিরিক্ত বেশি থাকায় ঢুকতে পারেনি স্পিড বোট। এরপর বায়ুসেনার হেলিকপ্টার করে শতাধিক গ্রামবাসীকে উদ্ধার করা হয়। এর পাশাপাশি, গতকাল থেকেই খানাকুলের বন্দিপুরে দ্বারকেশ্বর ও ঘোড়াদহে রূপনারায়ণের বাঁধ ভেঙে হু-হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি এলাকা বিচ্ছিন্ন। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল। দ্বারকেশ্বরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত জাঙ্গিপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকাও।
অন্যদিকে শিলাবতীর জলে প্লাবিত ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। গ্রামাঞ্চলে বহু পরিবার বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। জল থইথই ঘাটাল পুর-এলাকাও। বেশ কয়েকটি জায়গায় শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে শহরে।