অনির্বাণ বিশ্বাস ও সুনীত হালদার, উদয়নারায়ণপুর: বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি জলের তলায়। জলে খেলে বেড়াচ্ছে মাছ। কোথাও কোথাও জল নেমেছে ঠিকই, কিন্তু নষ্ট হয়ে গেছে খেতের সব সবজি। সদ্য আমন ধানের চারা রোয়া হয়েছিল। মনে হচ্ছে, তার ওপর দিয়ে কেউ রোলার চালিয়ে দিয়েছে। জল কিছুটা নামলেও, বিধ্বস্ত চেহারা হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিজমির।


গত কয়েকদিনে হাওড়ার ১০টি গ্রামপঞ্চায়েতের ৮৫টি গ্রাম পুরোপুরি ছিল জলের তলায়। শুক্রবার দেখা গেল অর্ধেক সংখ্যক গ্রামের জল নেমে গেছে। কিন্তু কৃষিকাজ ও মাছচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জলের তোড়ে ভেসে গেছে মাছের ভেড়ি।


প্রশাসনের তরফে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খ‍বর, দামোদরের বাঁধ উপচে উদয়নারায়ণপুরে যে জল ঢুকছিল, এই মুহূর্তে তা বন্ধ হয়েছে। তবে গড়ভবানীপুর অঞ্চল এখনও জলমগ্ন। 


ধীরে ধীরে জল নামছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুরে। এরই মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছে দুর্গতরা। যদিও পঞ্চায়েতের দাবি, যথাসাধ্য চেষ্টা করছে তারা। 


বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও ত্রাণের জন্য হাহাকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৫ দিন ধরে জলবন্দি হয়ে রইলেও, মেলেনি পানীয় জল, খাবার। উদয়নারায়ণপুরের বেশ কিছু অঞ্চলে এখনও এক মানুষ সমান জল। গজা গ্রামের প্রতিটি বাড়ির একতলা জলের তলায়। যাতায়াতের মাধ্যম বলতে একমাত্র নৌকা। 


কেউ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। কেউ আবার বাড়ির ছাদে। খোলা ছাদের ওপরই কাটছে রাত্রি-দিন। কবে জল কমবে, জানা নেই। অসহায় কুরচি শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫টি মৌজার প্রায় ২৬-২৭ হাজার মানুষ। যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। 


উদয়নারায়ণপুরের পাশাপাশি, হাওড়ার আমতাতেও শুক্রবার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। তবে বহু অঞ্চলে খাবার, পানীয় জলের অভাব নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কবে আবার সব স্বাভাবিক হবে, সুদিন ফিরবে, সেদিকেই তাকিয়ে উদয়নারায়ণপুর ও আমতার বাসিন্দারা।