সুনীত হালদার, সাঁকরাইল: ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই অফিসার, ভুয়ো সিবিআই-এর আইনজীবীর পর এবার ভুয়ো আর্মি অফিসারের হদিশ।
সেনা জওয়ান পরিচয় দিয়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে হাওড়ার সাঁকরাইল থেকে গ্রেফতার রাজেশ প্রসাদ নামে এক ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরিপ্রার্থীদের বিশ্বাস অর্জন করতে তিনি তাঁদের নিয়ে যেতেন পুণেতে। সেখানে হত মিথ্যে মেডিক্যাল টেস্ট। হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধৃত ব্যক্তি প্রকৃত সেনা জওয়ান কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে বেকার যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজেশের বিরুদ্ধে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিহার ও উত্তরপ্রদেশেও প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, চাকরিপ্রার্থীদের, প্রথমে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে নিয়োগের ফর্ম ফিলাপ করাতেন তিনি। এরপর, বিশ্বাস অর্জনের জন্য নিয়ে যেতেন পুণেতে। সেখানে ফাঁকা মাঠে হত শারীরিক পরীক্ষা।
এরপর হাতে দেওয়া হত সার্টিফিকেট। স্টেপ বাই স্টেপ ১ লক্ষ করে টাকা নিতেন অভিযুক্ত রাজেশ প্রসাদ। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে তিনবার, ৩০ থেকে ৩৫ জন চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে পুণেতে গিয়েছিলেন তিনি।
এক অভিযোগকারী বলেন, আমাদের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেয়। কোনও পরীক্ষা ছাড়াই। কিন্তু, ২০২০সালেো চাকরি না হওয়ায় সন্দেহ হয় চাকরিপ্রার্থীদের।
তাঁরা তখন চেপে ধরেন রাজেশকে। তিনি সব স্বীকার করে নেন বলে দাবি। কোর্ট পেপারে লিখিত দেন, মাসে মাসে টাকা ফেরত দেবেন। কিন্তু, সে প্রতিশ্রুতিও অপূর্ণ থেকে যায়।
এরপর হাওড়ার সাঁকরাইল থানায় এফআইআর করেন ৬ অভিযোগকারী। যদিও এই পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধৃতের মা-বাবা। বাবার দাবি, সব অভিযোগ মিথ্যে। পাশাপাশি, বাড়ির ছেলে সেনা জওয়ান বলেও জানান তাঁরা। বলেন, রাজেশ আর্মির হাবিলদার। মা বলেন, ছেলের ব্যাপারে কিছু জানি না। চক্রের নেপথ্যে আর কেউ জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে, ধৃতের বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত চলছে সেনাবাহিনীতেও। জানা গিয়েছে, রাজেশ সেনা হাভিলদার ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কাজে যোগ না দেওয়ায় "পলাতক" ছিলেন।
পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কোর্ট অফ এনকোয়ারি শুরু হয়েছে। পুলিশের তদন্তকারী দল জানিয়েছে কাদের থেকে কিভাবে ঠকিয়ে কত টাকা আত্মসাৎ করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।