জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এনডিএর রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের ৬জন বিধায়কের ভোট পাওয়ার কথা ছিল। কারণ, এ রাজ্যে বিজেপির নিজস্ব ৩জন বিধায়ক রয়েছে। পাশাপাশি তাদের সহযোগী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার রয়েছে ৩জন বিধায়ক।
কিন্তু, ভোট গণণায় দেখা গেল কোবিন্দ পেয়েছেন ১১টি ভোট।
অর্থাৎ ৫ জন এমন বিধায়ক রামনাথ কোবিন্দকে ভোট দিয়েছেন যাঁরা, বিজেপির নন।
তবে, চমক শুধু ক্রস ভোটিংয়েই শেষ হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিমবঙ্গের ১১জন বিধায়কের ভোট বাতিল হয়েছে।
গোটা দেশে বাতিলের সংখ্যাটা যেখানে ২১, সেখানে তার মধ্যে ১১জনই বঙ্গের।
এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বঙ্গ রাজনীতিতে বড় প্রশ্ন হল,
যে বিধায়করা নিজেদের দলের প্রার্থী মীরা কুমারকে ভোট দিলেন না, তাঁরা কী উদ্দেশ্যে এমনটা করলেন?
আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতি কি এর থেকে কোনও নয়া মোড় নিতে পারে?
যে ২১জন বিধায়কের ভোট বাতিল হল, সেগুলিও হিসাব মতো মীরা কুমারের দিকেই যাওয়া উচিত ছিল। অর্থাৎ ভোট নষ্ট হল সেই মীরা কুমারেরই।
শুধুমাত্র এ রাজ্য থেকেই এতসংখ্যক বিধায়কের ভোট বাতিল হওয়াটা কি কাকতালীয়? না কি এর নেপথ্যেও কোনও রাজনীতি আছে?
কিন্তু, এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, যে অবিজেপি বিধায়করা ক্রস ভোটিং করে মোদী সরকারের প্রার্থীকে ভোট দিলেন, তাঁদের নাম জানা সম্ভব নয়। কারণ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন গোপন ব্যালটে হয়। তবে, এটা বলাই যায় যে এই বিধায়করা তৃণমূল-বাম কিংবা কংগ্রেসের, অর্থাৎ যে দলগুলি মীরা কুমারকে সমর্থন করেছিল, তাদেরই কেউ মোদী সরকারের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। আর তাই এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
পাল্টা তৃণমূল বলছে, আমাদের ২১১জন বিধায়ক ভোটের দিন এসেছিলেন। তাঁরা মীরা কুমারকেই ভোট দিয়েছেন। আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্রস ভোটিংয়ের ঘটনা সামনে আসার পর, কটাক্ষের সুর বিজেপির গলায়।
তবে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনও দলই হুইপ জারি করে তাদের বিধায়ক বা সাংসদকে বাধ্য করতে পারে না, নিজেদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য। তাই ক্রস ভোটিং করা বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও কোনও সংস্থান নেই। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।