অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: দায়িত্ব নেওয়ার আগেই পুরপ্রশাসকমণ্ডলী থেকে পদত্যাগ ৩ জনের। আলিপুরদুয়ারে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আগামী দিনে দলে থাকব কিনা সেটা পরে বলব। ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য প্রাক্তন পুরপ্রধানের।


লোকসভা ভোটে জোর ধাক্কা দিয়েছে বিজেপি। ২১-এর হাইভোল্টেজ নির্বাচনের আগে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের মাথাব্যথা দলীয় কোন্দল। আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রশাসক পদ নিয়ে অসন্তোষ এমন পর্যায়ে যে ঘোষণার পরেই ইস্তফা দিলেন নতুন প্রশাসক কমিটির ৩ সদস্য।

শনিবার আলিপুরদুয়ার পুরসভা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব নেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মিহির দত্ত। এরপরই কমিটিতে থাকা ৩ জন, রুমা চট্টোপাধ্যায়, বহ্নি সাহা ও রানা চক্রবর্তী পদত্যাগ করেন।

আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক শ্রীরাজেশ জানিয়েছেন, ‘৫ জনের প্রশাসকমণ্ডলীর তালিকা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন ইস্তফা দিয়েছেন। বাকি ২ জনের হাতে দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় প্রশাসন ভালভাবে চলবে।’

সূত্রের খবর, পদত্যাগী ৩ বিদায়ী কাউন্সিলর, তৃণমূলের শহর সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলেই ৩ জন পদ ছেড়েছেন বলে সূত্রের দাবি। পদত্যাগীদের কারও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে চড়া সুর শহর তৃণমূলের সভাপতির গলায়। প্রাক্তন পুরপ্রধান এবং আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল কংগ্রেস শহর সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘আমি ভিক্ষার পাত্র নই। আমি কারও দয়ায় চলি না। আগামীদিনে তৃণমূল দল কতটা করব সেটা পরেই জানাব। পুরপ্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার মতামত নেওয়া তো দূরের কথা সবই জেলা সভাপতি নিজে ঠিক করেছেন।’

পুরসভায় প্রশাসক বসানো নিয়ে এই টানাপোড়েন ঘিরে শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূল তরজা। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সুমন কাঞ্জিলালের অভিযোগ, ‘বিধানসভা ভোটের আগে দলতন্ত্র কায়েম করা হল। নিজেদের পেটোয়া লোকদের বসানো হচ্ছে। কাটমানি খাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল বেরিয়ে আসছে।’

পাল্টা তৃণমূল জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেছেন, ‘এটা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সিদ্ধান্ত। এখানে তৃণমূল জেলা সভাপতির কোনও মতামত নেই।’

সবমিলিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে আলিপুরদুয়ার।