কলকাতা: ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য! সেই নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি নেতাদের বাগযুদ্ধও চরমে।


নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় মুখ্যসচিব, ডিজি-র পর, রাজ্যের তিন আইপিএস অফিসারকে তলব করেছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি লিখে পাল্টা প্রতিবাদ জানিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।


রাজ্যের মুখ্য সচিব ও ডিজি-কে তলব নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি লেখেন কল্যাণ। কেন রাজ্য থেকে ৩ আইপিএস-কে তোলা হচ্ছে, চিঠিতে প্রতিবাদ জানান লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকে লেখা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠিতে উল্লেখ, সংবিধান অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্য সচিব ও ডিজি-কে কীভাবে তলব করতে পারেন? সংবিধানে কী এর কোনও সংস্থান রয়েছে? মনে হচ্ছে এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে। বিজেপির এক রাজনৈতিক নেতার জন্য আপনারা রাজ্যকে এই চিঠি দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে লেখা কল্যাণের চিঠিতে উল্লেখ, অমিত শাহর মদতে মানা হচ্ছে না আইন।


এদিন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে সেই প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, এদিন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে সেই প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, একটা আধপাগলা লোক, সে নাকি উকিল। এত পাগল-ছাগল নিয়ে কি দল চলে?


একইসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি আক্রমণ করেন আরেক তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কেও। বলেন, সৌগতবাবু মাস্টারমশাই। ওনাকে সামনে লেলিয়ে দিয়েছে। ল্যাজে-গোবরে হচ্ছেন। উনি নিজেও বুঝতে পারছেন দল ডুববে।


কটাক্ষের সুরে পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদও। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দিলীপ তো গরুর দুধে সোনা পায়, গোয়ালে থাকে। আমার আইনজীবীর সার্টিফিকেট দিলীপের থেকে নিতে হবে নাকি। উনি জানবেন কীভাবে আমার কটা কেস রিপোর্টেড আছে।


বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে হামলা হয় বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়। শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে তলব করে চিঠি পাঠায় কেন্দ্র!


এরপর নাড্ডার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস অফিসার রাজীব মিশ্র, প্রবীণ ত্রিপাঠী, ভোলানাথ পাণ্ডেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট করতে বলে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় কেন্দ্র।


এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে এদিন তৃণমূল সাংসদকে একহাত নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, আইএএস, আইপিএস-দের কান বাধা আছে দিল্লিতে। যখন ইচ্ছা ডাকবে। কল্যাণ কে হরিদাস পাল? সে একজন সাংসদ, পরেরবার হারিয়ে বাড়ি ঢুকিয়ে দেব। ওর চিঠি ডাস্টবিনে আছে।


পাল্টা জবাব দিয়েছেন কল্যাণও। বলেন, একটা চিঠিতেই এত ভয় পেয়ে গেল? অথরিটি আছে কিনা জানতে চাইছে! করোনার জন্য ওর তো এমপি-র অন্নপ্রাসনটাও হয়নি। আর একটা এমপি-র কী অথরিথিটি আছে জানে না। লোকসভায় জিতলেও পরপর বিধানসভায় হেরেছে। এবার এমন হারাব যে বাংলায় লজ্জায় থাকতে পারবেন না।