রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িতে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এবার প্রকাশ্যে। বিধানসভা ভোটে শোচনীয় হারের জন্য জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগে সরব হলেন দলের পরাজিত প্রার্থী। তাঁর অভিযোগে সুর মেলালেন বিজেপির যুব সংগঠনের নেতা। সব দেখেও চুপ বিজেপির জেলা সভাপতি। 
দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বিধানসভা ভোটে  জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌজিৎ সিংহ। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘বিজেপির নেতৃত্বই পরিকল্পনা করে হারিয়ে দিয়েছে। রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের কাছে দলকে বিক্রি করেছে নেতৃত্ব।’ 
অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি টাউন মণ্ডলের   যুব মোর্চার সভাপতি বিজয় সরকারও মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন,  ‘এই বেনোজলদের বের না করলে কাজ করব না।’
এতদিন ছাইচাপা আগুনের মতো ধিকধিক করে জ্বলছিল বিজেপির অন্দরমহলের ক্ষোভ। বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দেড় মাসের মাথায় তা সামনে চলে এল।জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, দলের জেলা নেতৃত্বের  একাংশ তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হারিয়েছে। তাঁর অভিযোগ,বিজেপির নেতৃত্বই পরিকল্পনা করে হারিয়ে‍ছে আমাকে। রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের কাছে দলকে বিক্রি করে দিয়েছে নেতৃত্ব।এই দলের জন্য কে লড়বে? ঘুঘুর বাসা। ২০২৪ এ আত্মত্যাগ সব বৃথা হয়ে যাবে। কাউন্টিং হলেও নেক্সাস হয়েছে। এদের চিনি। রাজ্য ও কেন্দ্রকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে।
অন্তর্ঘাতের অভিযোগ শোনা গিয়েছে দলের যুব সংগঠনের নেতার মুখেও।  বিজয় সরকার বলেছেন, যে কর্মীরা নিষ্ঠার সঙ্গে দলের জন্য কাজ করেছে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিল, সদর বিধানসভাকে হারিয়ে দিল শুধুমাত্র অন্তর্ঘাতে। বেনোজলদের না বার করলে আগামীতে লোকসভা ভোটে কেন দল করব? আমরা পার্টি অফিস যাচ্ছি না এবং কোনো রকম কাজকর্মে থাকছি না। 
লোকসভা ভোটের মতো দুরন্ত ফল না হলেও, বিধানসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে বিজেপির ফল খারাপ বলা যায় না।জেলার ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৪টি আসনে জয়ী হয়েছে তারা।২০১৮ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সৌজিৎ সিংহ। জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ কুমার বর্মার কাছে পরাজিত হন তিনি। তারপরই দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে সরব সৌজিৎ। এ বিষয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। 
এই ঘটনায় কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল।