কলকাতা: এ যেন রক্ষকই ভক্ষক! যাঁদের হাতে শিশু-সুরক্ষার দায়িত্ব, তাঁদের বিরুদ্ধেই পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ! শুক্রবার গ্রেফতার হয়েছেন, দার্জিলিঙের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ। টানা ৩দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর এবার তাঁর স্ত্রী, জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষকেও গ্রেফতার করল সিআইডি।


স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই আপাতত শিশু পাচারকাণ্ডে সিআইডির জালে। সিআইডি সূত্রের দাবি,

চন্দনা চক্রবর্তীকে মদত এবং শিশু পাচারের ষড়যন্ত্রে স্বামী মৃণালের মতোই সাস্মিতাও প্রত্যক্ষভাবে সামিল ছিলেন। শুধু তাই নয়, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চন্দনার হোম থেকে শিশু পাচার হচ্ছে জেনেও চুপ ছিলেন জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক। এমনকী সাস্মিতা কিছু বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ। সিআইডি সূত্রে দাবি, পাচারের জন্য শিশুপিছু ২৫ হাজার টাকা করে পেতেন মৃণাল ঘোষ। সাস্মিতাও পাচার-বাবদ চন্দনার কাছ থেকে অর্থ নিতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় সাস্মিতা ঘোষ, বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। এরপর বিকেলে গ্রেফতার করা হয় জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিককে। সিআইডি সূত্রে দাবি,

আগে সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করতেন সাস্মিতা ঘোষ। আর শিলিগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রকল্প আধিকারিক ছিলেন তাঁর স্বামী মৃণাল। সেই সময় থেকেই চন্দনার সঙ্গে দম্পতির পরিচয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চন্দনাই প্রভাব খাটিয়ে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিঙে শিশু সুরক্ষা আধিকারিক হিসেবে পোস্টিং পাইয়ে দিয়েছিলেন ঘোষ দম্পতিকে।

এদিন, মৃণাল ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে শিলিগুড়ির কলেজপাড়ায় তাঁদের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় সিআইডি। বেশকিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা।

এরই মধ্যে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্য দত্তকের নামে ১৭টি শিশু বিক্রি করেন চন্দনা। যে সব দম্পতিকে শিশুগুলি বিক্রি করা হয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করেছে সিআইডি। সেই মতো এদিন বেশ কয়েকজন দম্পতিকে ডেকে বয়ান রেকর্ড করেন তদন্তকারীরা।