রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : ভুটান পাহাড়ে টানা বৃষ্টির জের। হাতিনালার জল উপচে ভাসছে জলপাইগুড়ির বেশ কয়েকটি চা বাগান। জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে চা গাছ। রাজ্য সড়কের ওপরেও এই মুহূর্তে হাঁটুজল। রাস্তা ছাপিয়ে এমনভাবে জল বইছে যে, নদী না রাস্তা বোঝা দুষ্কর। বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ির পুরসভার ৩টে ওয়ার্ড। জলযন্ত্রণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর। পরিকল্পনাহীন নির্মাণের কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে সাফাই পুরসভার।


বর্ষায় ডুয়ার্সের অন্য রূপ দেখা যায়। সেই টানে ছুটে যান বহু পর্যটক। কিন্তু ভারী বৃষ্টি হলেই সিঁদুরে মেঘ দেখেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা। এই মুহূর্তে ভুটান পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টির জেরে এবারও হাতিনালার জলে ভাসল বানারহাট, বিন্নাগুড়ি, হলদিবাড়ি-সহ একাধিক চা বাগান। অন্যদিকে, প্রতিবারের মতো জল ঢুকতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি পুর-এলাকায়। ৩টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদে শনিবার সকালে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। জল জমার দায় নাগরিকদের ওপরেই চাপিয়েছে পুর প্রশাসন।


বিন্নাগুড়ি চা বাগানের বাসিন্দা সুনীতা ওঁরাও বলেছেন, 'বৃষ্টিতে চা বাগান, বাড়িতে জল ঢুকেছে, রাস্তা জল থই থই।' এদিকে, জলপাইগুড়ি পুরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিঙ্কু রজক বলেছেন, 'ঘরে জল ঢুকেছে, যার জেরে রান্না বন্ধ, প্রতিবছর একই ঘটনা, নিকাশি ঠিক নেই।' অপরদিকে রাজু মণ্ডল জানিয়েছেন, '২৪ বছর ধরে সমস্যা চলছে। চারদিকে সাপ আর জোঁক ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব জানি না। নিজেরা টাকা খরচ করে রাস্তা সারাই, আবার বর্ষা এলেই সেই এক ছবি।'


গোটা পরিস্থিতির মাঝে প্রশাসনের অবশ্য দাবি, পরিকল্পনাহীন নির্মাণের কারণেই সমস্যা। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেছেন, '৩ দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে একদিকে, অন্যদিকে পরিকল্পনাহীনভাবে বাড়ি তৈরি হয়েছে, সেই কারণেই সমস্যা।' কিন্তু প্রশাসনের নজর এড়িয়ে পরিকল্পনাহীনভাবে ঘরবাড়ি তৈরি হল কীভাবে? জবাব নেই কারও কাছে।