রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: দলের শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। পাশে পেলেন বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম নেতাদেরও। নজিরবিহীন ঘটনা জলপাইগুড়ির মেটেলিতে। তৃণমূল সদস্যকে শোকজ করল জেলা নেতৃত্ব।


একই অভিযোগে সরব তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম নেতারা। এক জায়গায় উড়ছে ঘাসফুল, পদ্ম, হাত, কাস্তে-হাতুড়ির পতাকা। মতাদর্শের দিকে থেকে যখন ভিন্ন মেরুতে রয়েছে চার দল, তখন এমনই বিরল দৃশ্য ধরা পড়ল জলপাইগুড়িতে। মেটেলি থানার ইংডং গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূলের সদস্যের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে, নাগরাকাটার প্রাক্তন বিধায়ক ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি জোসেফ মুণ্ডার বিরদ্ধে একজোট হয়ে রাস্তায় নামল চার দল। দলীয় নেতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে, বিরোধী দলগুলিকেও পাশে পেলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা।


ইংডং গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বিজয় মাহাতো বলেন, ‘আমার বাড়িতে বাগান থেকে প্রচুর লোক এনে হামলা করে জোসেফ মুন্ডা। আমি এফআইআর করেছি।  গ্রেফতার না হলে আন্দোলন চলবে। আমরা চাই তৃণমূলের বোর্ড হোক।  তবে, জোসেফের নেতৃত্বে নয়।’ মেটেলি মণ্ডলের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিত ছেত্রী বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে দেখছি জোসেফ মুন্ডা ও তার স্ত্রী সবিতা মুন্ডা এলাকায় নিজেকে বড় লিডার মনে করছেন।  শুধু বিজেপি সিপিএম কংগ্রেসকে নয় তৃণমূলও খুশি নয়।  উনি এলাকার পরিবেশ খারাপ করে রেখেছেন।’ যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জোসেফ মুণ্ডা।


তাঁর দাবি, সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে আন্দোলনে নামায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানাবেন। যদিও ইতিমধ্যেই ইংডং গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বিজয় মাহাতোকে শোকজ করেছে জেলা নেতৃত্ব। জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘আমাদের পলেসি আছে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হওয়া যায় না, যদি সামিল হয়ে থাকে তাকে শো-কজ করেছি, সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।’ বিতর্ক যতই থাকুক, এদিন মেটেলিতে যে ছবি দেখা গেল, তা সত্যিই নজিরবিহীন বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।