রাজা চট্টোপাধ্যায়, ফালাকাটা: শুরুর আগেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম পূরণে জলপাইগুড়িতে উঠল কাটমানি-বিতর্ক। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতার আত্মীয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ইন্টারনেটে ডাউনলোড করে বিক্রি করছেন। এই ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার তিন সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রকল্প নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠলো রাজগঞ্জের আমবাড়ি ফালাকাটায়। 


সংসারের লক্ষ্মীমন্তদের ভাঁড়ারে যাতে কখনও টান না পড়ে, তার জন্য হাজির রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। কিন্তু, শুরুর আগেই, সেই ভাণ্ডারে ভাগ বসানোর অভিযোগ।


জলপাইগুড়িতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের ফর্ম পূরণে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতার আত্মীয়ার বিরুদ্ধে। এই মহিলার দেওর আমবাড়ি ফালাকাটা অঞ্চলের তৃণমূলের নেতা বলেই পরিচিত। 


রাজগঞ্জ ব্লকে এখনও সরকারিভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম দেওয়া শুরু না হলেও রাজগঞ্জের আমবাড়িতে এক তৃণমূল নেতার বউদি বাড়িতে বসেই ইন্টারনেট থেকে এই  প্রকল্পের ফর্ম ডাউনলোড করে সেটা পূরণ করে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ।  


শুধু তাই নয়, ফর্ম পূরণের নামে বিন্নাগুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাণ্ডারিগঞ্জ গ্রামের সাধারণ মহিলাদের মধ্যে কারোর কাছ থেকে ৬০ টাকা আবার কারোর থেকে ৮০ টাকা করেও নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।


ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে সেল্ফ-হেল্প গ্রুপের ওই মহিলাকে টাকা নিয়ে বলতে শোনা গিয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় তৃণমূল নেতার আত্মীয়াকে বলতে শোনা যায়, আমি ৫০ টাকা করে নিই। ফর্ম যদি আমি দিই তাহলে ৬০ টাকা নেব। ফর্ম যদি ওরা নিয়ে আসে তাহলে আমি ৫০ টাকা নেব।


জলপাইগুড়ির এই ছবি ভাইরাল হতেই তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক।  রাজ্য বিজেপির সহ সভাপিতি রাজু  বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প মানেই কাটমানি। এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালুর আগেই, মা লক্ষ্মী ঘরে ঘরে পৌঁছোনোর আগেই তৃণমূল নেতাদের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। এটাই বাংলা। আমবাড়ি ফালাকাটা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। মুখ্যমন্ত্রী চাকরি দিতে পারছেন না তাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প করে মা লক্ষ্মীকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাইদের ঘরে যাতে পৌঁছে দিতে পারে, এটা তারই কৌশল। 


এই টাকা চাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হতেই স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তিতে পরেছে তৃণমূল। এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই, ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।