বীরভূম:  অল্প দিনেই বড় দ্বন্দ্ব। বিয়ে ভাঙার মুখে। জল গড়াল আদালতে। বিয়ে বাঁচাতে বিচারকের অভিনব উদ্যোগ।
বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী গৌতম দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় নদীয়ার মেয়ে অহনা দাসের। দু’জনেরই বয়স পঁচিশের আশেপাশে। ফেসবুকে পরিচয়। সেখান থেকে প্রেম। তারপর গত বছর মার্চে বিয়ে। কিন্তু, অক্টোবর আসতে আসতেই কার্যত সব শেষের মুখে!
স্বামী গৌতমের পরিবারের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ করে ১৯ অক্টোবর বাবার বাড়ি চলে যান অহনা। সিউড়ি থানায় দায়ের হয় মামলা।
আগাম জামিনের আবেদন করেন স্বামী গৌতম।
মঙ্গলবার সিউড়ির জেলা বিচারক পার্থসারথী সেনের এজলাসে মামলার শুনানির সময় স্ত্রী অহনা বলেন, তিনি ডিভোর্স চান। এরপরই স্বামী গৌতমকে ডেকে পাঠান বিচারক।
পুলিশ অফিস থেকে তাঁকে আদালতে নিয়ে আসে। আদালতে স্বামী গৌতম দাবি করেন, স্ত্রী অহনা তাঁকে মারধর করেছেন। বিচারক গৌতমের কাছে জানতে চান, আপনার ওজন কত? জবাবে স্বামী বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ কেজি। এরপর স্ত্রীর কাছে তাঁর ওজন জানতে চান বিচারক। অহনা বলেন ৫৫ থেকে ৫৮ কেজি।
তখন বিচারক, স্বামী গৌতমকে প্রশ্ন করেন, ৫৮ কেজির স্ত্রী কী করে আপনাকে মারধর করল? এরপরই বিচারক দম্পতিকে বলেন, আপনারা বাড়িভাড়া নিয়ে কয়েকদিন দু’জনে একসঙ্গে থাকুন। শুনে স্বামী গৌতম বলেন, বাড়িভাড়া নেওয়ার মতো সামর্থ্য আমার নেই।
শুনে বিচারক বলেন, তাহলে কি জেলে পাঠাবো? এরপর বিচারক নিজেই বলেন, আপনারা তিনদিন সিউড়ির একটি ভাল হোটেলে থাকুন। বাড়ির অন্য কেউ আপনাদের সঙ্গে দেখা করবে না। যাবতীয় খরচ আমার। দু’জনে একসঙ্গে থাকার পর কী মনে হল ১৯ জানুয়ারি আমায় জানাবেন।
যে দু’জনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই দু’জনই সিউড়ি শহরের একটি হোটেলে এসে ওঠেন! রাত কাটান একসঙ্গে। বুধবার সকালে তাঁদের খোঁজখবর নিতে যান সরকারি আইনজীবী।
প্রেমের জোয়ারে ভেসে ঘর বেধেছিলেন! সেই ঘরই যখন ছারখার হওয়ার জোগাড়, তখন এই একসঙ্গে এই একটা রাতই কিন্তু অহনা-গৌতমের গলার সুর অনেকটা পাল্টে দিতে পেরেছে। গৌতমের দাবি, আশা করি সমস্যা মিটে যাবে। স্ত্রীও জানান, তিনি সংসার করতে চান।