মোহন প্রসাদ, দার্জিলিং : করোনার ধাক্কা কেড়েছে অনেককিছু। স্বাভাবিক জীবন-যাপন থেকে খাদ্যাভ্যাস, বদলেছে অনেককিছুই। এর মাঝেই পুষ্টিবিদরা অনেকেই স্বাস্থ্যকর-প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে বাড়তি পরামর্শ দিচ্ছেন। করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়লে শারীরিক দূর্বলতা কাটাতে হোক বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে তরতাজা রাখতেই যে নিদান। এর মাঝেই সুদিনের খোঁজ পেয়েছেন 'কড়কনাথ' মুরগি প্রতিপালকরা। কোভিড সারিয়ে ওঠার পর- শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে কড়কনাথ মুরগি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, এমন দাবি সামনে আসার পরই দার্জিলিংয়ে একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে কড়কনাথ মুরগির চাহিদা। আর তার জেরে যে মুরগি প্রতিপালনে বিশেষ জোর দিচ্ছেন স্থানীয়রা।


গত ৮ জুলাই জানা যায় মধ্যপ্রদেশ সরকারের অধীনে থাকা মাংস গবেষণা কেন্দ্র ও কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয় কোভিড পরবর্তী একাধিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কড়কনাথ মুরগি খাওয়া প্রচণ্ড উপকারী হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন তারা। তাদের তরফে একধাপ এগিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) কাছে আবেদনও জানানো হয় যাতে পোস্ট কোভিড রিকভারির ক্ষেত্রে কড়কনাথ মুরগির মাংস খাওয়ার কথা উল্লেখ করার নিদান দেন তারা। যদিও আইসিএমআরের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।


কড়কনাথ হল ভারতের একমাত্র কৃষ্ণ বর্ণের মুরগি। একাধিক গবেষণার দাবি, সাধারণ মুরগির তুলনায় কড়কনাথ মুরগিতে অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রা বেশি। সঙ্গে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম। যার ফলে সাধারণ ব্রয়লার মুরগির থেকে স্বাদ তুলনামূলক বেশি হয়। কড়কনাথ মুরগির মাংসে ১.‌৯৪ শতাংশ ফ্যাট রয়েছে, যা অন্য প্রজাতির মুরগির মাংসের তুলনায় অনেকটাই কম। কিন্তু প্রোটিনের মাত্রা প্রায় কয়েক গুণ বেশি। যার ফলে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি সুষম আহারও। মধ্যপ্রদেশে কড়কনাথ মুরগি প্রতিপালন হয় যথেষ্ট পরিমাণে। সেখানে এটি 'কালীমাসি' নামেও পরিচিত। মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও ছত্তিশগড়, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রেও পাওয়া যায় কড়কনাথ মুরগি। সাধারণ মুরগির দামের থেকে যার দাম কিছুটা বেশি। তাই প্রতিপালকদের ক্ষেত্রে লাভের অঙ্কের পরিমাণও বেশি।