নারদ-কাণ্ডে তদন্ত চায় হাইকোর্ট, ভিডিও পুরনো হলেও দোষীরা সাজা পাবে না? বললেন প্রধান বিচারপতি
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 19 Apr 2016 01:16 PM (IST)
কলকাতা: নারদ-কাণ্ডে তদন্ত চায় কলকাতা হাইকোর্ট। সত্য উদঘাটনে দ্রুত শুনানি চান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। না হলে জনমানসে সংশয় তৈরি হবে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মঙ্গলবার নারদা মামলার শুনানিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, নারদ নিউজের ভিডিও ফুটেজ যদি দু বছরের পুরনোও হয়, তা হলে কি দোষীরা শাস্তি পাবে না? নারদ-ফুটেজে যাঁদের দেখা গিয়েছে তাঁদের পক্ষের আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন আদালতে দাবি করেন, নারদ নিউজের ফুটেজটি দু বছর আগে তোলা। এখন এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার এই তত্ত্ব খাড়া করেছেন। পুরনো ভিডিও, ভোটের আগে ইচ্ছে করে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করে অভিযোগ খারিজ করতে চেয়েছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতির এদিনের বক্তব্যের অর্থ, দু বছরের পুরনো ফুটেজ-তৃণমূলের এই তত্ত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছে না হাইকোর্ট। ঘটনা যা-ই হোক না কেন, স্টিংকাণ্ডে অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই জনপ্রতিনিধি। তাই সত্যি সামনে আসুক। দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হোক। জনগণের আস্থাই গুরুত্বপূর্ণ, এমনই মন্তব্য করেছে আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, নারদ নিউজের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। জনমানসে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। সত্য সামনে আসা দরকার। ভিডিও ফুটেজ যদি জালও হয়, তা হলেও সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ফুটেজটি সত্যি হলেও এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। জনগণের ভরসা এবং বিশ্বাস সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভিডিও ফুটেজে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তারা প্রায় প্রত্যেকেই জনপ্রতিনিধি। সত্য প্রকাশ্যে আসা জরুরি। প্রধান বিচারপতি এও বলেন, এই ভিডিও ফুটেজ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য কোনও একটি পরীক্ষাগারে পাঠাবার কথা ভাবছি। রিপোর্ট আসলে তা গোপন রাখা হবে মামলার শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এরপর প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, নারদ নিউজের সম্পাদক ম্যাথ্যু স্যাম্যুয়েলের পক্ষ থেকে যে দুটি হলফনামা দেওয়া হয়েছে, তার বিরোধিতায় অন্যান্য পক্ষের কারও কোনও বক্তব্য থাকলে, তা আগামী ২৭ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে। ২৭ তারিখ ফের মামলার শুনানি। নারদ-ফুটেজে যাঁদের দেখা গিয়েছে তাঁদের পক্ষের আইনজীবীরা হলফনামা জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করেন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, এই মামলা দিনের পর দিন চলতে পারে না। তদন্ত এবং মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত করতে হবে। সত্য সামনে আনতে হবে। তাই আপনাদের এই অনুরোধ মানতে পারছি না। নারদের ফুটেজ এ দিন জমা পড়ে হাইকোর্টে। কোর্ট যে কমিটি গড়ে দিয়েছিল, তারা স্যামুয়েলের থেকে আনা একটি মোবাইল ফোন, পেন ড্রাইভ এবং সিডি কোর্টে জমা দেয়। এগুলিকে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙেকর লকারে রাখার নির্দেশে দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টি গোপন রাখতে হবে। লকারের চাবি থাকবে হাইকোর্টের কাছে। এদিকে আদালতের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের দাবি, মুখোশ উন্মোচিত হোক। দাবি ধামাচাপা দেওয়া যাবে না, বুঝেছেন মমতাও। এমনই কটাক্ষ করেছেন আবদুল মান্নান।