সুনীত হালদার, হাওড়া: মোটা টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু এক ব্যবসায়ীর। গতকাল সন্ধ্যেবেলায় তাপস সিংহ (৪৫) নামে ওই ব্যবসায়ীকে ধুলাগড়ের কাছে ছ’ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশ থেকে  অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের লোকের অভিযোগ তাকে রাস্তায় রাসায়নিক স্প্রে করে খুন করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।


হাওড়া সালকিয়ার বাসিন্দা তাপস সিংহ(৪৫) একটি টেলারিং দোকান চালাতেন। এর পাশাপাশি তিনি জমির বেচাকেনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। গতকাল সকালে তিনি  বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন একটি দেড় বিঘা জমির বেচাকেনায় কমিশনের  টাকা আনতে। তাঁর স্ত্রী পম্পা সিংহ জানানস বাস থেকে নেমে তিনি রানিহাটি মোড়ে নামার পর জমির মালিকের গাড়িতে করে  আমতার দিকে রওনা হন। এরপর জমি রেজিস্ট্রি করার পর  কমিশনের দু'লক্ষ টাকা হাতে পান এবং স্ত্রীকে ফোনে সব জানান। পরে বাসে চেপে বাড়ির দিকে আসছিলেন।


এই সময়ে তাপসবাবু তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে কয়েকবার কথা বলেন। স্ত্রীকে জানান,  কয়েকজন লোক বাইকে চেপে তাঁকে অনুসরণ করছে। এতে তিনি ভয় পেয়ে যান। ধুলাগড়ের মোড়ের কাছে ছ নম্বর জাতীয় সড়কে তিনি বাস থেকে নেমে  ফের স্ত্রীকে ফোন করেন। তারপর থেকে  আর  তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ একজন পুলিশ কর্মী তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানান যে,  তাপসবাবুকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


তাঁর স্ত্রী পম্পা সিংহ সালকিয়ার বাড়ি থেকে হাওড়া হাসপাতালে পৌঁছে যান। তিনি দেখেন, তাঁর স্বামীর মুখ থেকে রক্ত ও ফেনা বের হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে টাকার লোভে কোন রাসায়নিক স্প্রে করে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে। তারঁ কাছে কমিশন হিসেবে পাওয়া দুই লক্ষ টাকা পাওয়া যায়নি। যদিও মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে। মৃত ব্যক্তির বন্ধু ও আত্মীয়দের অভিযোগ, হাতে টাকা পাওয়ার পর তাপসবাবুকে যেভাবে দুষ্কৃতীরা অনুসরণ করে পরিকল্পনামাফিক খুন করেছে তাতে অনেকে জড়িত থাকতে পারে। তাঁরা চান গোটা ঘটনাটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। মৃতদেহটিকে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।