করুণাময় সিংহ, মালদা : পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানের হুবহু এক সই, সঙ্গে সিলমোহরও, একঝলকে দেখলে আসল কী নকল, বোঝাই দায়। সরকারি অফিসের নাকের ডগায় বসে শংসাপত্র দুর্নীতির অভিযোগ। সই ও সিলমোহর জাল করে শংসাপত্র বিক্রির অভিযোগে মালদার চাঁচলে গ্রেফতার হলেন এক দলিল লেখক। সরকারি তদন্তেই ধরা পড়েছে এই প্রতারণা। জনপ্রতিনিধিদের সই থেকে সিলমোহর, এভাবে জাল করার পিছনে কোনও বড় চক্র কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
অভিযোগ ওঠে বাঘের ঘরে ঘোঘের বাসার মতো মালদার চাঁচলে সরকারি অফিস চত্বরেই সক্রিয় রয়েছে প্রতারণাচক্র। যার পরই শুরু হয় সরকারি তদন্ত। কীভাবে সামনে উঠে আসে গোটা ঘটনা? মালদার চাঁচলের চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা রকিউল আলির দাবি, সম্প্রতি জমি নিবন্ধীকরণের জন্য তাঁর বংশতালিকার শংসাপত্র প্রয়োজন ছিল। সে জন্য চাঁচল এক নম্বর ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে যান। অভিযোগ ওই অফিস চত্বরেই কর্মরত দলিল লেখক শফিকুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে তাঁকে দ্রুত শংসাপত্র তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। বলা হয় সইসাবুদের জন্য কোনও ঝঞ্ঝাট পোহাতে হবে না। বংশতালিকা শংসাপত্র হাতেও পান রকিউল আলি।
পরে বিএলআরও আধিকারিকরা খুঁটিয়ে দেখে বুঝতে পারেন, শংসাপত্রে প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যের সই এবং সিলমোহর জাল করা হয়েছে। চাঁচলের বাসিন্দা রকিউল আলি বলেছেন, 'একটা জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিল আমাদের। সেই বিবাদের জন্য শফিকুল ইসলামে কাছে যাই। উনি আমাকে একটা সার্টিফিকেট দেন। বিএলআরও অফিসে যখন এনকোয়্যারিতে যায়, তখন ওরা বলে এই শংসাপত্র জাল।' যে ঘটনা বোঝার পরই থানায় অভিযোগ দায়েরের পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে, চন্দ্রপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আতাউর রহমান গোটা বিষয়ে বলেছেন, 'শফিকুল ইসলাম এলাকারই বাসিন্দা। মোটা টাকার বিনিময়ে তিনি শংসাপত্র বিক্রি করছিলেন। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। তারপরই গ্রেফতার।' মালদার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এর পিছনে কোনও চক্র কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।