আবীর দত্ত ও করুণাময় সিংহ, মালদা: কালিয়াচকে একই পরিবারের চারজনকে খুনের ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা ওই পরিবারের ছোট ছেলে আসিফ মহম্মদের বন্ধু সাবির আলি ও মহম্মদ মাফুজ।
পুলিশ সূত্রে খবর, খতিয়ে দেখা হচ্ছে মা-বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে খুনের ঘটনায় ধৃত আসিফ বন্ধুদের সাহায্য নিয়েছিল কি না। আসিফের কাছ থেকে মিলেছে ল্যাপটপ, বেশ কিছু পেন ড্রাইভ। কীভাবে ওই সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার হত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় আসিফ জানিয়েছে, মা-বাবা, দাদা-বোন ও ঠাকুমা-সহ পরিবারের পাঁচজনকে ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর বেহুঁশ হয়ে পড়লে মুখে লাগানো হয়েছিল লিউকোপ্লাস্ট।
খুনের আগের দিন বাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে আনে সে। ফলে পরিকল্পনামাফিক খুনের ছক, এ বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশ।
এর পাশাপাশি, আসিফের দুই বন্ধুর বাড়ি থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনা তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে। বন্ধুর বাড়ি থেকে উদ্ধার ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৪ রাউন্ড কার্তুজ। অস্ত্র কারবারিদের সঙ্গে যোগ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় থাকতেন গৃহকর্তা, তাঁর স্ত্রী, মা এবং তিন ছেলে-মেয়ে থাকতেন। এদিন সেই বাড়ির পাশের গুদামে মাটির তলা থেকে উদ্ধার হয়-- ৫৩ বছরের জাওয়াদ আলি, তাঁর স্ত্রী ইরা বিবি, মেয়ে আরিফা খাতুন (১৫) এবং গৃহকর্তার মা ৭২ বছরের আলেকজান বিবি-র মৃতদেহ।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতের দাদা জানিয়েছেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি মা-বাবা, বোন, ঠাকুমাকে এবং তাঁকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য করে আসিফ। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে চারজনকে গুদামের চৌবাচ্চায় চোবায় সে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে মৃতদেহগুলি মাটি খুঁড়ে পুতে দেয় এই তরুণ। অচৈতন্য না হওয়ায়, বিষয়টি দেখতে পেয়ে যান দাদা। এমনকি ভাইয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাঁর। এরপর কোনওরকমে পালিয়ে যান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ধৃতের দাদা।