জামবনি (পশ্চিম মেদিনীপুর): পাহাড়ে পিছিয়ে পড়া জনজাতিগুলির জন্য একগুচ্ছ উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার জঙ্গলমহলেও পিছিয়ে পড়া জাতিদের জন্য উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একসময় মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল ছিল জঙ্গলমহল। রক্ত আর বারুদের গন্ধে নাভিশ্বাস উঠেছিল সাধারণ মানুষের। এদিনের অনুষ্ঠানে বাম এবং তৃণমূল সরকারের আমলে জঙ্গলমহলের ফারাক তুলে ধরার চেষ্টা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  বলেন, আগে ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় বেরোলে মাওবাদী সন্দেহে গ্রেফতার করা হত। আগে শুধু গুলি চলত, রক্ত ঝরত। এখন জঙ্গলমহলের মানুষের মুখে হাসি ফিরেছে, আর কান্না নেই।
বৃহস্পতিবার, জামবনির প্রশাসনিক সভা থেকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জঙ্গলমহলকে ঢেলে সাজানোর কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আগে স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য লোকে জঙ্গলমহলে আসত, ঝাড়গ্রামকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে আনব।
পাহাড় ও জঙ্গলমহল যে তাঁর অত্যন্ত প্রিয় জায়গা, বৃহস্পতিবারও তা বোঝানোর চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি এদিন ফের তাঁর ঘোষণা, আদালতের অনুমতি পেলেই আগামী বছর জানুয়ারির শেষে ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং ও আসানসোলকে নতুন জেলা করা হবে।
একইসঙ্গে, এদিন দল এবং সরকারকে বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারি কাজে সংকীর্ণ রাজনীতির জায়গা নেই, মানুষের কাজ করতে হবে, সবার জন্য কাজ করতে হবে।
প্রশাসনের পাশাপাশি, এদিন দলীয় নেতা-কর্মীদেরও কড়া বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, যাঁরা মানুষের কাজ করেন না, তাঁদের তৃণমূল কংগ্রেস করার দরকার নেই। যারা অন্য কাজ করছেন, তাঁদের পাশে আমি নেই। যতদিন থাকব, মানুষের কাজ করে যাব।
অন্যদিকে, জামবনির প্রশাসনিক সভা থেকে নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, সারা দেশে ধর্মীয় রাজনীতি ও অসহিষ্ণুতা চলছে। বাংলায় এসব কিছু হয় না। কাজ করাটাই আমাদের কাজ। বাংলা আগে অনেক পিছিয়ে ছিল। এখন সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে দেশকে পথ দেখাবে বাংলা।
মানুষের পাশে থাকাই যে তাঁর সরকারের লক্ষ্য, এদিনের প্রশাসনিক সভা থেকে তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বার্তা, আগামী দিন বাংলাই দেশকে নেতৃত্ব দেবে।