রানাঘাট (নদিয়া): নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ অব্যাহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নির্বাচন কমিশন শোকজ করার পরও  শুক্রবার নদিয়ার জনসভায় সরাসরি নাম না করে কমিশনকে নিশানা করেন  মমতা।

 

বিরোধীদের তোলা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের মুখে বীরভূমের পুলিশ সুপার এবং ওই জেলার তিন থানার ওসিকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এর মধ্যে বোলপুর এবং ময়ূরেশ্বর থানার ওসিকে মাসখানেক আগে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু তাঁদের জায়গায় যাঁরা দায়িত্ব নেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠায় তাঁদেরও অপসারিত করেছে কমিশন। এ নিয়ে ফের কমিশনকে তোপ দেগে মমতা বলেন, যাকে বদলি করছো তারাও আমার পরিবারের। যাকে আনছো, তারাও আমার পরিবারের। বদলাতে বদলাতে তুমি চইলা যাও। কিচ্ছু হবে না।

 

চাপড়ার সভায় তিনি বলেন, পুলিশের পিছনে পুলিশকে লাগিয়ে দিচ্ছে। ক’দিন আগে লাভপুর, ময়ূরেশ্বর থানার ওসিকে বদল করেছিল। ফের বদলি করে দিল। আমি বুঝে পাই না, আইসি ওসি কি ভোট দেবে? ভোট দেবে তো সাধারণ মানুষ। আর কোথাও তো সরাচ্ছে না, শুধু এখানে পুলিশ কর্মীদের বদলি করে দিচ্ছে।

 

মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণের সমালোচনায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেন, যে ভাবে কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে থাকতেই তাকে আক্রমণ করছেন, চ্যালেঞ্জ করছেন তাতে চিঠি দিক না কমিশন!

 

দলনেত্রী যখন আক্রমণে প্রথম সারিতে, তখন বাকিরাই বা পিছিয়ে থাকেন কেন?  রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত আবার সরাসরি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে আক্রমণ করেন। বলেন, আমার মনে হয় সিআরপিএফ, এসএসবি দিয়ে আর হবে না। এরপর ওবামার সাথে যোগাযোগ করে মার্কিন পুলিশ আনতে বলুন। আমার বিরুদ্ধে জাইদিকে দাঁড় করিয়ে দিন। নাসিম জাইদি, বাকি সব কয়েদি! সব্যসাচীর এই মন্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।

 

নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে বৃহস্পতিবার মমতাকে শোকজ করে কমিশন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেদিনই বীরভূমের সভা থেকে পাল্টা সুর চড়ান তৃণমূলনেত্রী। বলেন, আমাকে নির্বাচন কমিশনের শোকজ। ইঞ্চি ইঞ্চি বলেছি বলেছি। বেশ করেছি বলেছি। হাজার বার বলব!

 

সেই সভার সিডি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো দিল্লিতে পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। বৃহস্পতিবার বীরভূমের সভা থেকে অনুব্রত মণ্ডল কী বলেছিলেন, তারও সিডি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর।