হাওড়া : মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের তীব্র প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দেওয়া রিপোর্ট প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'রিপোর্ট এখনও দেখিনি। তবে বিষয়টি বিচারাধীন, তাই এনিয়ে বেশি কিছু বলব না।' যদিও তারপরই তিনি জোড়েন, 'বিকৃত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। এমনকি কারা রিপোর্ট দিয়েছে, তাদের পরিচয় জানি, কিন্তু বলব না।' পাশাপাশি আক্রমণের সুর চড়িয়ে রাজ্যকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে কার্যত অভিযোগের সুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'হারের পরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বদনাম করার চেষ্টা চলছে। হারের পরেও লজ্জা নেই, কিছুতেই হার মানতে পারছে না।'


ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্থ দোকানদারদের ভ্রাম্যমান দোকান দেওয়ার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের জন্য নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই উঠে আসে মানবাধিকার কমিশনের দেওয়া রিপোর্টের প্রসঙ্গ। যার উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা দখল করে নানারকম চক্রান্ত চলছে। ওদের সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল।' যার পরই খোঁচার সুরে তিনি জোড়েন, 'উত্তরপ্রদেশে এত ঘটনা, কতগুলো কমিশন গঠন করা হয়েছে। যা হয়নি, তা নিয়ে মিথ্যে প্রচার চলছে। উত্তরপ্রদেশে আইনের কোনও শাসন নেই, পবিত্র গঙ্গা দিয়ে মৃতদেহ বাংলায় পাঠিয়ে দিচ্ছে, বিহারে গিয়ে খোঁজ নিন কত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।'


গতকাল হাইকোর্টে ৫০ পাতার রিপোর্ট পেশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। রবীন্দ্রনাথের কবিতার অংশ উদ্ধৃত করে রিপোর্টে রাজ্য সরকারকে  ছত্রে ছত্রে আক্রমণ করা হয়েছে। ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির’ উদ্ধৃত করে কমিশনের রিপোর্ট। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টে  বলা হয়েছে, ‘গত ২ মাসে রবীন্দ্রনাথের মাটিতে খুন, ধর্ষণ, ভিটেছাড়া হতে হয়েছে মানুষকে।  এই ধরনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না হলে ছড়িয়ে পড়বে অন্য রাজ্যে। ভারতের মতো মহান দেশে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বেজে যাবে।এই হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার।’


কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন।  গোটা মামলার বিচারপর্ব রাজ্যের বাইরে করতে হবে।‘আদালতের পর্যবেক্ষণে সিট গঠন করে তদন্ত হোক।  দ্রুত বিচারে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে বিচার শেষ করতে হবে।  বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।  হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।’