মনোজ্ঞা লহিয়াল, কলকাতা: হ্যাকিংকাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠন করল রাজ্য সরকার। সোমবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ‘প্রথম রাজ্য হিসেবে তদন্ত কমিশন গঠন করল পশ্চিমবঙ্গ। ক্যাবিনেটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। 


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কমিশনে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি লকুর। থাকবেন হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য।’ জানা গিয়েছে, দুসদস্যের এই তদন্ত কমিশন অবিলম্বে কাজ করা শুর করবে। 


কীভাবে হ্যাকিং করা হয়েছে, কারা করেছে, কারা এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত-- তা খতিয়ে দেখবে কমিশন। বেআইনিভাবে কী করে এটা করা সম্ভব, তাও খতিয়ে দেখবে কমিশন। 


মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি ভেবেছিলেন, কেন্দ্র এই নিয়ে উদ্যোগী হবে। কিন্তু, তা না হওয়ায়, তাঁর মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মমতা বলেন, সবাইকে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা ভেবেছিলাম, সংসদ চলাকালীন কেন্দ্র নিশ্চয় তদন্ত করবে। আর সেই তদন্ত করা হবে সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতিকে দিয়ে। 


কিন্তু, সরকারের (কেন্দ্র) কোনও ভ্রুক্ষেপ না থাকায় আমি দিল্লি যাওয়ার আগে এই তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা প্রথম রাজ্য যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তদন্ত কমিশন গঠন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছি। 


পেগাসাস ইস্যুতে মোদি সরকারের ওপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। একেবারে সামনের সারিতে থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর বিবৃতি ছেঁড়ার অভিযোগে চলতি অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।


এই প্রেক্ষাপটেই সোমবার বিকেলে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সনও মনোনীত হয়েছেন তিনি।


এই পরিস্থিতিতে সোমবার প্রায় ২ বছর পর রাজধানীতে পা রাখবেন তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে, বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়ার সলতে পাঁকানোর কাজ শুরু হয়ে যেতে পারে মমতার এই দিল্লি সফরের মাধ্যমে। যার ইঙ্গিত মিলেছিল তৃণমূল নেত্রীর ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল বার্তাতেই।