শিলিগুড়ি: সেচ ও পূর্ত দফতরের  নানা কাজ নিয়ে অনেক সময় দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায়। এবার সেই ইস্যুতে কার্যত সরব হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। শুধু সরব হওয়াই নয়, দুর্নীতি রোধে এই দুটি দফতরের জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
সেচ ও পূর্ত দফতরে কাজের নামে লুঠ চলছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের জিনিস। উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। দুর্নীতি রুখতে গড়লেন ২টি বিশেষজ্ঞ কমিটি। দুটি কমিটিতেই ২০ জন করে বিশেষজ্ঞ থাকবেন।
ইতিমধ্যে রাস্তা, বাঁধ, ভাঙন রোধের মতো যে সব কাজ হয়েছে, সেখানে কোনও দুর্নীতি ও গাফিলতির মতো ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা কমিটি খতিয়ে দেখবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা বন্ধেও সক্রিয় ভূমিকা নেবে কমিটি।
বুধবার উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন ‘উত্তরকন্যা’য় দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের প্রশাসনিক বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে সেচ ও পূর্ত দফতরের নানা কাজ নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি বলেন,  সেচ ও পূর্ত দফতরে নানা কাজের নামে লুঠ চলছে। রাস্তা, বাঁধ তৈরির মতো বিভিন্ন কাজে নিম্নমানের মালপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। নদী থেকে পাথর তুলে এনে, তা আমাদেরই বিক্রি করা হচ্ছে! পাথর পাচার করা হচ্ছে বাংলাদেশে। বিষয়টি সেচ দফতর ও পুলিশ কেউই দেখছে না।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়া নদী থেকে আর পাথর তোলা যাবে না, খুব তাড়াতাড়ি এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হবে। নদী ভাঙন প্রতিরোধ নিয়েও এদিনের বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভাঙন প্রতিরোধের নামে প্রতি বছর পার বাঁধানো হবে। আর তা ভেঙে কোটি কোটি টাকা জলে চলে যাচ্ছে, এটা করা যাবে না। এত দেনার মধ্যে টাকা দেব, আর টাকা জলে যাবে, চলবে না। এমনভাবে পার বাঁধাতে হবে, যাতে ২০ বছর পার না ভাঙে। সে রকমভাবেই পরিকল্পনা করতে হবে।
রাস্তা নির্মাণ নিয়েও বেশ কিছু নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কালো পাথর দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে হবে। সাদা পাথর দিয়ে অনেক জায়গায় রাস্তা তৈরি হচ্ছে। সেই পাথর ভেঙে যাওয়ার পর অনেকে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এটা করা যাবে না।
উন্নয়নকে হাতিয়ার করে, এবারের ভোটে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের পাশাপাশি এবার স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন উপহার দিতেই দুর্নীতি বিরোধী নানা পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই ধারনা পর্যবেক্ষকদের একাংশের।