নয়াদিল্লি: কলকাতা থেকে প্রথমে দিল্লি বা মুম্বই গিয়ে ইউরোপের বিমান ধরার দিন সম্ভবত শেষ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ফের শুরু হতে পারে কলকাতা- লন্ডন সরাসরি উড়ান। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয় অনুঘটকের কাজ করতে পারে এ ক্ষেত্রে।
শুক্রবার রোড রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণের সময় হাজির ছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী তখনই অনুরোধ করেন, কলকাতা থেকে লন্ডনের মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি নিয়মিত সরাসরি উড়ান চালু করতে। জবাবে রাজু তখনই জানান, এ ব্যাপারে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেবেন তিনি। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, ২৯৪ জনের বিধানসভায় একা তৃণমূলই ২১১টি আসন জিতে নেওয়ায় দিল্লিতে ঘাসফুলের প্রভাব যে আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে, রাজুর জবাব তারই ইঙ্গিতবাহী।
কলকাতাই দেশের একমাত্র মেট্রো শহর যার সঙ্গে আমেরিকা বা ইউরোপীয় কোনও শহরের সরাসরি উড়ান যোগ নেই। আগে লন্ডন, ফ্রাঙ্কফুর্টের মত ইউরোপীয় শহর থেকে এ রাজ্যে বিমান যাতায়াত করলেও বাণিজ্যিকভাবে এই রুট লাভজনক না হওয়ায় ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় সবকটি রুট। কয়েক বছর আগেও কলকাতা থেকে ইউরোপে যেত এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়ান। অলাভজনক হওয়ায় ২০০৭-এ বন্ধ হয়ে যায় সেটিও। তার ৪ বছর পর বন্ধ হয় লুফথহানসার কলকাতা- ফ্রাঙ্কফুর্ট উড়ান, সেটিই ইউরোপ থেকে কলকাতার মধ্যে শেষতম উড়ান ছিল। ২০০৮-এই কলকাতা- লন্ডন উড়ান বন্ধ করে দেয় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। এখন এ শহর থেকে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের মত দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে বিমান চলাচল করে।

অবশ্য এই প্রথম যে মমতা দেশি বিদেশি বিমান সংস্থাগুলিকে কলকাতা থেকে উড়ান চালুর অনুরোধ করলেন, তা নয়। প্রথম দফায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েও এ ব্যাপারে তিনি অনুরোধ করেন লুফথহানসা, জার্মানউইংস, কেএলএম, এয়ার ফ্রান্স ও থমসন এয়ারওয়েজকে। অনুরোধ যায় জেট এয়ারএয়েজের কাছেও। কিন্তু সমীক্ষা চালিয়ে বিমান সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয়, এই রুট বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক নয়। অন্তত ৬০ শতাংশ আসন ভরার ব্যাপারেও সন্দেহ প্রকাশ করে তারা। বিষয়টি সে সময় ধামাচাপা পড়ে গেলেও দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আর এ নিয়ে দেরি করতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা- ইউরোপ উড়ান চালুর ক্ষেত্রে এয়ার টার্বাইন ফুয়েল ট্যাক্স সম্পূর্ণ মকুব করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও দাবি করেছে, দিল্লি হয়ে কলকাতার বহু যাত্রী প্রতি বছর ইউরোপ যাচ্ছেন। কলকাতা থেকে উড়ান চালু হলে সরাসরি এখান থেকেই বিমান ধরবেন তাঁরা। ফলে লোকসানে নয়, লাভেই চলবে বিমান সংস্থাগুলি।