খড়গপুর: ‘আমি হাতজোড় করে আপনাদের বলছি, থানায় কম যাবেন। ওসিকে কম ফোন করবেন।' পুলিশের ওপর দলের নিচুতলার নেতা কর্মীদের প্রভাব খাটানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্মী সম্মেলনে বার্তা দিলেন মানস ভুঁইয়া। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের যে মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের খোঁচা, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দুশ্চিন্তা থেকে এমন মন্তব্য।


দলের কাজে পুলিশকে ব্যবহার করছে শাসকদল। বিরোধী নেতারা প্রায়ই তোলেন এই অভিযোগ। শনিবার সেই অভিযোগের সারবত্ত্বা কার্যত স্বীকার করে নিচু তলার নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া। খড়গপুর দু’নম্বর ব্লকের বসন্তপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েতরাজ কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ।

যেখানে মানস ভুইঁয়া বলেন, ‘আমরা যদি ভাবি, পুলিশ কাকু আছে আমার আর কি চিন্তা। কে বলে কাকু। কে বলে জেঠু। কেউ বলে দাদু। অজিত বাবুকে এর ঔষধ দিতে বলছি। এই কাকু, জেঠু, দাদু বলা বন্ধ করুন। আমি অধিকাংশ সভায় দেখছি। এই ওসি কাজ করছে না। এই এসপি অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। সংগঠন যদি মজবুত থাকে। তবে সব এসপি কথা শুনবে। সব ওসি, সব সিআই, সব এসডিপিও কথা শুনবে।’

যথারীতি এই ইস্যুতে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপি-র  সহ সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘পুলিশমন্ত্রী এতদিন দল চালিয়েছেন পুলিশ দিয়ে। দলের কর্মীদের বিশ্বাস করতেন না। পুলিশ বুঝে গেছে, ২০২১ নির্বাচনে তৃণমূল বিদায় নিচ্ছে। তাই নিরপেক্ষ কাজ করতে শুরু করেছে। তাতেই তৃণমূল নেতারা ঘাবড়ে গেছে। তাই আজ মানস ভুঁইয়া কর্মীদের বলছে নেতাদেরকে ফোন করতে। উনি দুশ্চিন্তায় আছেন তাই এই ধরনের কথা বলছেন।’

শনিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে রাজধানীতে দেখা করে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। যেখানে তিনি ফের রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের এক অংশের রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করার অভিযোগ ফের একবার তোলেন। এর মাঝেই মানস ভুঁইয়ার সতর্কবার্তায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলে দলের নিচুতলায় কী প্রভাব পড়ে, এখন সেটাই দেখার।