পূর্ব বর্ধমান: কখনও অসাড় হয়ে এসেছে হাত-পা। কখনও বুজে এসেছে চোখ। কিন্তু হাল ছাড়েননি। রাতভর দামোদরের স্রোতের সঙ্গে লড়াই করেছেন ৬২ বছরের বৃদ্ধা। ১২ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও ফিরে এসেছেন বর্ধমানের বাড়িতে।
নাম তপতী চৌধুরী। ডাক নাম, হাসি। সারাক্ষণ মুখেও হাসি। দেখে বোঝার উপায় নেই কী ঘটে গিয়েছে জীবনে। মেমারির কুচুট-এর শিশুশিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা ৬২ বছরের তপতীদেবী। সপ্তাহে ৫ দিন কুচুটে থাকেন, ২ দিন পূর্ব বর্ধমানের কালীবাজারের বাড়িতে। শনিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। সদরঘাটে হাত ধুতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান উত্তাল দামোদরে।
বাঁচানোর আর্তনাদ করেন বৃদ্ধা। কিন্তু, কারও কানে সেই আওয়াজ পৌঁছয়নি। তিনি বলেন, বাঁচানোর জন্য চিৎকার করি। কেউ শুনতে পায়নি। ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সাঁতার জানতাম তাই ভেসে থাকার চেষ্টা করি। তারপর শুধু ভেসে যাওয়া।
তপতীদেবী বলেন, একটা সময়ে অসাড় হয়ে যায় শরীর। তবুও কোনও মতে ভেসে থাকার চেষ্টা করি। রাতভর প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভেসে যাওয়ার পর রবিবার সকালে হুগলির পুরশুড়ায় বৃদ্ধাকে ভেসে যেতে দেখেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা। ফিরে আসা মৃত্যুর মুখ থেকে....।