দার্জিলিং: শনিবার সকাল থেকে অশান্তির আগুনে উত্তপ্ত পাহাড়। পুলিশের গুলিতে তাদের তিন সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। পুলিশ গুলি চালায়নি বলে পাল্টা দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঘটনার সূত্রপাত সিংমারিতে। সেখানে মিছিলে বাধা দিতেই শুরু হয়ে যায় মোর্চা-পুলিশ সংঘর্ষ। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি! একদিকে মোর্চা সমর্থকরা ইট, পাথর, বোতল ছোঁড়ে। পাল্টা পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গের দাবি, পুলিশের গুলিতে তাদের তিন সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ অবশ্য মৃতের সংখ্যা ২ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের গুলিতে যে ২ জন মোর্চা সমর্থক শহিদ হয়েছেন, তাঁদের সেলাম জানাই।

মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সুর চড়িয়েছে মোর্চা। পাল্টা পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর অভিযোগ উড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পাশাপাশি এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাও জানান, পুলিশ গুলি চালায়নি।
এডিজি আইনশৃঙ্খলা এও দাবি করেন, মোর্চার তরফ থেকে গুলি চলেছে। গুলিবিদ্ধ এক পুলিশকর্মী। আহত পঁয়ত্রিশ জন পুলিশ কর্মী।এর মধ্যে উনিশ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সাতজন মোর্চা সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে, এ দিন ছবিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে।

শনিবার বেলা গড়াতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সিংমারি। একাধিক পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় মোর্চা সমর্থকরা। ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট কিরণ তামাঙ্গকে তারা কোপায় বলেও অভিযোগ। তাঁকে গুরুতর অবস্থায় শিলিগুড়ির একটি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীও জানান, তিনি মারাত্মক জখম হয়েছেন।
এ দিন সিংমারিতে মোর্চার সদর দফতরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে, বেশ কিছু হকি স্টিক এবং ধারাল অস্ত্র। মিছিলে বাধা দেওয়া ঘিরে এ দিন ঘুমেও মোর্চা-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে।

এদিকে মোর্চার অভিযোগ, এ দিন ভোরে ডালিতে বিনয় তামাঙ্গের বাড়িতে তল্লাশির নামে ভাঙচুর করে পুলিশ ও তৃণমূল। বিনয়ের স্ত্রী সঞ্জু তামাং বলেন, বাড়ির তালা ভেঙে আচমকা ভোর রাতে পুলিশ ও তৃণমূল ঢোকে। তছনছ করে। আগুন লাগানোর চেষ্টা করে।

অভিযোগ উড়িয়ে প্রশাসনের পাল্টা দাবি, হামলার খবর পেয়ে বিনয় তামাঙ্গের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, হামলাকারীরা ততক্ষণে পালিয়ে যায়।

এ দিনই সকালে দার্জিলিঙের মোর্চা বিধায়ক অমর রাইয়ের ছেলে তথা দলের মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা বিক্রম রাইকে আটক করে পুলিশ। সূত্রের খবর, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে দুপুরের দিকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।