কলকাতা: মুকুল রায়ের ভূমিকায় ক্রমেই তৈরি হচ্ছে ধন্দ ! অসংলগ্ন কথা বলছেন মুকুল, না কি পুরোটাই তাঁর কৌশল? রাজনৈতিক মহলে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন
বিধায়ক হিসেবে তিনি নিজেকে বলছেন বিজেপি। পিএ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও বলছেন তিনি বিজেপি মনোনীত !! কিন্তু তিনিই কিছুদিন আগে ঘটা করে তৃণমূলে ফিরে যান। অথচ প্যাকের চেয়ারম্যান হিসেবে বিজেপির দিকে থেকেই দিচ্ছেন উত্তর। আবার একদম উল্টো ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। 

খুব একটা ক্ষুরধার না হলেও, ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রতিনিধিদের উপর আক্রমণের অভিযোগে বিজেপির নিন্দাই করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে ত্রিপুরায় ঘাস-ফুল শিবিরের সম্ভাবনার কথা তুলতে তিনি বলছেন, আগের থেকে ভাল ফল তো হবেই তৃণমূলের। আবার উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলতেই মুকুলের গলায় অন্য সুর। বলছেন, বিজেপির হয়ে দাঁড়ালে ভোটে জিতবেন কিন্তু তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়ালে তিনি জিতবেন কি না তা ঠিক করবেন মানুষই। অর্থাত্ তখন তিনি বিজেপি হিসেবে তুলে ধরছেন। আবার ত্রিপুরায় তৃণমূলের সাংগঠনিক প্রশ্নে তিনি নিজেকে বলছেন তৃণমূল নেতা !! ফলে মুকুলের ভূমিকা ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। 


গত শুক্রবার নদিয়া সফরে যান কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। দলীয় বৈঠকের পর কৃষ্ণনগর পুরসভায় সাংবাদিকরা মুকুল রায়কে আগামী উপনির্বাচন এবং ত্রিপুরায় দলীয় তৎপরতা নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন। কিন্তু বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়ের জবাব শুনে সবার চোখ কপালে ওঠে! সেখানেও কখনও বিজেপি, কখনও তৃণমূলের পক্ষে কথা বলেন মুকুল। তিনি এও বলেন, 'উপনির্বাচনে পর্যুদস্ত হবে তৃণমূল কংগ্রেস, হারবে ত্রিপুরাতেও।'


আজ আবার একইরকম কথা তাঁর মুখে। কেন এমন কথা বললেন মুকুল রায়? মুখ ফস্কে মন্তব্য? না কি অসুস্থতা? না কি অন্য কোনও কারণ? রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জল্পনা। গত ১১ জুন বিজেপি ছেড়ে আবার তৃণমূলে ফেরেন তিনি। এরপর দলত্যাগ আইনে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তোলে বিজেপি। এরই মধ্যে রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হন মুকুল রায়।


গত ৩০ জুলাই, চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের মাঝে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রথম বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়। সেদিন বিধানসভায় কমিটির বৈঠক হয়। এই বৈঠকে যোগ দেননি বিজেপি বিধায়করা। মুকুল রায়কে চেয়ারম্যান করার বিরোধিতা করে পিএসি-র বৈঠকে যোগ দেবে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। এর পাশাপাশি, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করা নিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া পিটিশনের  দ্বিতীয় দফার শুনানি  হয় সেদিন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও একাধিক আইনজীবী।