কলকাতা: সামনে পঞ্চায়েত ভোট। এই সময়ে দলের কেউ কেউ তলায় তলায় সিপিএম ও বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই গুঞ্জন কালীঘাটের কানেও পৌঁছেছে। এই প্রেক্ষাপটে, শুক্রবার, কালীঘাটে দলের কোর কমিটির বৈঠক থেকে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর বার্তা,তৃণমূল করবেন আবার তলায় তলায় সিপিএম-বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, এটা চলবে না। দুই নৌকায় পা রেখে এগোনো যাবে না। যাঁরা যাওয়ার তাঁরা চলে যেতে পারেন। এতে তৃণমূলের কিছু এসে যায় না।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তৃণমূল নেত্রীর কথা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, বিজেপির সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক সংঘাত চরমে উঠতে চলেছে। যে কারণে তাঁর এই হুঁশিয়ারি। আর এই প্রেক্ষাপটেই এ দিন মুকুল রায়ের দায়িত্ব আরও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আগে তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি দেখতেন। সেখান থেকে সরিয়ে তাঁকে শুধু পঞ্জাবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ দিনের বৈঠকে কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে তীব্র ভর্ৎ‍সনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, আপনি জেলার কোটায় মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু, জেলার জন্য কোনও কাজই করছেন না। এ ভাবে চললে, মন্ত্রিত্ব থাকবে না।

তপন দাশগুপ্ত হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি। এই জেলাতেই ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট করা হল মন্ত্রী অসীমা পাত্র এবং বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে।

এর মধ্যে দিয়ে তপন দাশগুপ্তের ডান ছাটার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।

দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতেও এ দিন ফের বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সতর্ক করে দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিন বিধায়ককে।

জয়ন্ত নস্করকে বলেন, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করুন। না হলে দল থেকে তাড়িয়ে দেব।

গোবিন্দ নস্করের উদ্দেশে বলেন, ব্যক্তিগত লাভ লোকসান ছাড়া আপনি তো দলের কোনও কাজই করছেন না!

নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করতে বলে সতর্ক করেন সওকত মোল্লাকেও।

এ দিন, কম বেশি প্রতিটি জেলা নেতৃত্বকে সতর্ক করে দেন তৃণমূলনেত্রী। বার্তা দেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বছর গড়ালেই পঞ্চায়েত ভোট। সে দিকে নজর রেখেই এমন ভাবে সতর্কবার্তা মমতার।