ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: সনাতনকাণ্ডে ফের চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে। সূত্রের খবর, নিজেকে ভারত সরকারের বিশেষ কৌঁসুলি বলে দাবি করতেন ওই আইনজীবী। উদ্ধার হয়েছে একাধিক নথি। এনিয়ে আইন মন্ত্রককে চিঠি দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। কাদের সঙ্গে সনাতনের যোগাযোগ ছিল, কীভাবে তিনি এধরনের ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করতেন, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সনাতনের দুটো ইমেল আইডি থেকেও প্রচুর তথ্য উদ্ধার হয়েছে। দেখা গেছে, কেন্দ্র ও রাজ্যের একাধিক সরকারি এজেন্সির সঙ্গে মেলের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন সনাতন। সেইসব তথ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। আদালতেও এইসব তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, সনাতনকাণ্ডে তথ্য জানতে চেয়ে এবার বিজেপিকে চিঠি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। সনাতনের কাছ থেকে আগেই উদ্ধার হয়েছে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ আবেদনের একটি রসিদ। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জানতে চান, কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সনাতনের যোগাযোগ ছিল। এছাড়াও, সনাতনের বিপুল আয়ের উত্স জানতে সব দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সিবিআই ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, সনাতন তাঁদের কৌঁসুলী নন। পুলিশ সূত্রে খবর, খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সনাতনের ভুয়ো পরিচয় দেওয়ার উদ্দেশ্য কী ছিল, আর কোথায় তিনি প্রতারণার জাল ফেঁদেছিলেন।
একে দেবাঞ্জনে রক্ষে নেই, এবার সনাতন দোসর। জেরার মুখে সনাতন রায়চৌধুরীর দাবি ঘিরে, কার্যত চোখ কপালে ওঠার জোগাড় পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সনাতন দাবি করেছেন, তিনি ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস সম্মেলনে গিয়েছিলেন। ওই সম্মেলনে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। সনাতনের এই দাবির সত্যাসত্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রকের কাছে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সত্যিই সনাতন ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন কি না তা জানতে চাওয়া হবে। যদি যোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে কীভাবে দিয়েছিলেন? সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে না কি, অন্য কোনও ভাবে? এসব প্রশ্নের উত্তরই পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তবে শুধু জোহানেসবার্গ নয়, টোকিওতেও গিয়েছিলেন সনাতন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত দাবি করেছেন, ২০১৩ সালে ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে টোকিওয় ইন্দো-জাপান বিজনেস সামিটেও অংশ নিয়েছিলেন। সনাতন কোন কোন দেশে গিয়েছিলেন, পাসপোর্ট খতিয়ে দেখে, তারই সন্ধান পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এদিকে, এই অবস্থায় সনাতনের আরেকটি অফিসের হদিশ মিলল। বিবাদী বাগে ৪ নম্বর গভর্নমেন্ট প্লেস ইস্টের এই ডেল্টা হাউসে ২০১৮ তে অফিস ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। এদিকে, একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত, সনাতন ভোটেও লড়াই করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে লোক জনশক্তি পার্টির টিকিটে দমদম কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সনাতন।এবিষয়ে লোক জনশক্তি পার্টির একাধিক রাজ্য নেতাকে ফোন করা হলেও, তাঁরা কেউ কিছু বলতে চাননি।