কলকাতা: এ বছর রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল হবে না।  পুজো কমিটিগুলি জলসার আয়োজন করতে পারবে না। খোলামেলা রাখতে হবে পুজো মণ্ডপ।মণ্ডপের মধ্যে মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব। করোনাবিধি মেনে দুর্গাপুজো করতে হবে। এমনই নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন। 


আগামীকাল মহালয়ার আগে এই নির্দেশিকা জারি হল।  এতে জানানো হয়েছে, দুর্গাপুজোর পর রেড রোডে যে কার্নিভাল হয়,করোনা আবহে  গত বছরের মতো এবারেও তা হবে না। পুজো কমিটিগুলির জন্য পুজো মণ্ডপে জলসার মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতিও থাকছে না। গতবারের মতো এবারও দুর্গাপুজো-কালীপুজোয় দর্শকশূন্যই থাকবে রাজ্যের সমস্ত পুজো মণ্ডপ।


উল্লেখ্য, এ বারও দর্শকদের প্যান্ডেলের বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করতে হবে।  গতবছরের করোনা বিধি মেনেই আয়োজন করতে হবে পুজোর।  গত শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।


pগত বছর, করোনা-পরিস্থিতিতে, রাজ্যের সর্বত্র পুজো-মণ্ডপে দর্শকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিধিনিষেধে সুফল মিলেছিল, এই দাবি করে, এবছর আদালতের দ্বারস্থ হন জনৈক অজয়কুমার দে। আগের বছরের নির্দেশ বহাল রাখার জন্য আদালতে আবেদন জানান তিনি। গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতিরা রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চান, গতবছর পুজোর সময়, যে বিধিনিষেধ বহাল ছিল, তা এবছর বহাল রাখতে রাজ্যের কোনও আপত্তি আছে কি না? 


তখন, রাজ্যের তরফে জানানো হয়, তাদের কোনও আপত্তি নেই। এরপর হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়,এবারও করোনা সংক্রান্ত গতবারের বিধিনিষেধ মেনেই পুজো হবে।অর্থাত্‍, এবারও প্রতিটি পুজো মণ্ডপ নো এন্ট্রি জোন হিসেবে গণ্য হবে। পুজোর এলাকা ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে নো-এন্ট্রি বোর্ড লাগাতে হবে। মণ্ডপে পুজো কমিটির কতজন কর্মকর্তা থাকতে পারবেন, তার সংখ্যাও নির্দিষ্ট করতে হবে। বড় পুজো অর্থাত্‍, ৩০০ বর্গ মিটারের বেশি মাপের মণ্ডপে প্রবেশের জন্য উদ্যোক্তা, স্থানীয় বাসিন্দা ও ঢাকি মিলিয়ে ৬০ জনের তালিকা বানাতে হবে। মণ্ডপের ভিতরে থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ৪৫ জন। ৩০০ বর্গ মিটারের কম মাপের মণ্ডপের জন্য ২০ জনের তালিকা হলেও একসঙ্গে থাকতে পারবেন ১৫ জন। ছোট পুজোর ক্ষেত্রে ৫ ও বড় পুজোর ক্ষেত্রে মিটারের দূরত্বে ব্যারিকেড দিতে হবে।সেখান থেকেই দর্শকদের প্রতিমা দর্শন সারতে হবে। সেইসঙ্গে করোনা বিধি নিয়ে মণ্ডপে চালাতে হবে প্রচার। প্রতিটি মণ্ডপে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।  


এদিকে, করোনা ও অন্যান্য বিধি মেনে পুজো হচ্ছে কি না, তা দেখতে আজ দক্ষিণ কলকাতার বড় পুজোমণ্ডপগুলি ঘুরে দেখলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমকল ও সিইএসসি-র আধিকারিকরাও।  


পুজোর দিনে লেকটাউনের যানজট কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। সূত্রের খবর, পুজোর কদিন অন্য রুট দিয়ে গাড়ি ঘোরানো হতে পারে।  আজ সল্টলেক, লেকটাউনের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখলেন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার।  তিনি জানান, যাঁদের করোনা ভ্যাকসিনের ২টি ডোজ নেওয়া হয়েছে গেছে, শুধুমাত্র তাঁদের পুজো মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগ করা যাবে।