নদিয়া: তৈবচারা। একেবারে অজ পাড়াগাঁ। নাকাশিপাড়া অঞ্চলে গ্রামটার নাম অনেকেই চিনতে পারবেন না। মাস কয়েক আগে মাটির রাস্তা ঢালাই হয়েছে মাত্র! আর সেখান থেকেই কিনা ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের নতুন স্বপ্নের উত্থান।
দেবশ্রী মজুমদার। গত কয়েকবছর ধরেই ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের চেনা নাম। কিন্তু, রবিবার বদলে গেল জীবন। এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশীপের হেপ্টাথালনে স্বপ্না বর্মনের কীর্তি নিয়ে যখন হইচই, তখন চার ইন্টু চারশো মিটার রিলে-তে সোনা জিতে নতুন করে স্বপ্ন দেখালেন দেবশ্রী।
সোনা জিতলেও এখনই নিজের বাড়িতে ফেরা হচ্ছে না দেবশ্রীর। কারন, আন্তঃরাজ্য অ্যাথলেটিক্স। সোনার মেয়ের অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাঁর মা। চার বোন। অভাবের সংসারে পড়াশুনো। পাশাপাশি ট্র্যাক-জয়ের স্বপ্ন দেখা ছোটবেলাতেই। ৯ বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর অভাবের সংসারে প্রবল ধাক্কা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো। দেবশ্রীই এখন পরিবারের ভরসা। ভরসা গোটা দেশেরও। মেয়ের কীর্তিতে আপ্লুত মা।
ছোটবেলা থেকে পড়তেন তৈবচারা অক্ষয় হাইস্কুলে। মাধ্যমিক পাশ করার পর আর পড়াশুনা চালানো সম্ভব হয়নি। তখন থেকেই ধ্যান-জ্ঞান অ্যাথলেটিক্স। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের কাছে দেবশ্রী অনুপ্রেরণার এক নাম।
দৌড়। দৌড়। শুধু ফিনিশিং লাইনে সবাইকে টপকে যাওয়া নয়। দারিদ্র্যের সঙ্গেও প্রতি সেকেন্ডে লড়াই। লক্ষ্য শুধু এগিয়ে যাওয়া। স্বপ্নের হাতছানি। ছুটছেন দেবশ্রী।