সুজিত  মণ্ডল, শান্তিপুর : অবিরাম বৃষ্টিতে বানভাসি দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। ৫ দিন পরও হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলির বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। চলছে ডিঙি। কোথাও কোমর জল, কোথাও আবার এক মানুষ জল। বুধবার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বেরিয়ে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর অবধি সড়ক পথে পৌঁছতেই পারেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমতায় পৌঁছে জনগণকে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। খতিয়ে দেখেন মানুষের দুঃখ দুর্দশা। 

শুধু এই তিন জেলাই নয়, কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে জলে ভাসছে শান্তিপুরের হরিপুর গ্রাম।  ভাগিরথীর জল বাড়ার ফলে নদিয়ার শান্তিপুরের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চৌধুরী পাড়া, নতুন গ্ৰাম, হালদারপাড়া, হাউস ‌ সাইড‌ কলোনী সহ কিছু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে।  চিন্তায় ওই সমস্ত এলাকার সাধারণ মানুষ। 


২০০০ সালে বন্যা‌র পর খুব একটা বড় ধরনের বন্যা‌ দেখেনি হরিপুর অঞ্চলের কয়েকটি গ্ৰামের মানুষ। ইতিমধ্যেই নৃসিংহপুর হাউস কলোনী থেকে চৌধুরীরপাড়ার রাস্তা জলের তলায়।  এই জল বাড়তে থাকলে বাড়ির ভিতর  ঢুকতে আর বেশিক্ষণ সময় লাগবে না।

 তিনটি গ্ৰাম জলমগ্ন। যেভাবে জলের স্রোত ঢুকছে,  তাতে খুব শিগগিরিই এলাকায় ঢুকবে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। ভাগীরথীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাষের জমি বিশেষ করে সবজি চাষের জমিতে জল ঢোকায় চাষিদের মাথায় হাত। ধার দেনা করে চাষ করে সবে মাত্র সামান্য সুখের মুখ দেখেছেন তাঁরা। 

গ্রামবাসীদের দাবী, ভাগীরথীর জল বাড়ার কারণে রাত জেগে একপ্রকার পাহারা দিতে হচ্ছে। বেড়ে চলেছে দুশ্চিন্তা। গ্ৰামের মেম্বার, প্রধান ইতিমধ্যে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শোভা মন্ডল সরকার। নজর রাখছেন পরিস্থিতির দিকে।

এরই মধ্যে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। উদ্বেগ বাড়িয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের সঙ্গে সক্রিয় হয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, জোড়া ফলার প্রভাবে কাল পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস। শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমবে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ।