সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি।  বানভাসি এলাকায় চরম দুর্ভোগ মানুষের।  এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে বৃষ্টি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। 


শুক্রবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায়।  কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের  পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের সঙ্গে সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা। এই জোড়া ফলার প্রভাবেই রাজ্যে চলছে বৃষ্টি।  বৃষ্টির জেরে আরও বাড়তে পারে নদীর জলস্তর।  

জেলায় জেলায় এখনও জলমগ্ন পরিস্থিতি।  খানাকুলে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি। গ্রামগুলো এখনও জলমগ্ন। যেখানে একতলা বাড়ি সমান জল ছিল, সেখানে জল কিছুটা নেমেছে। এরই মধ্যে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন দুর্গতরা। বাড়ির ছাদে যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের দাবি, খাবারের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। রাস্তায় নৌকা যাতায়াত করায় দিনের বেলায় এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হচ্ছে। বহু জায়গায় ট্রান্সফর্মার জলে ডুবে যাওয়ায় এলাকা বিদ্যুত্হীন। দামোদরের জলে ভাসছে হাওড়ার আমতা ২ নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম। বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। কলার ভেলা অথবা টিন কেটে নৌকা বানিয়ে চলছে যাতায়াত। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে NDRF। দুর্গতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ত্রাণ শিবিরে। অতি বৃষ্টির জেরে শান্তিপুরের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাগীরথীর জল ঢুকতে শুরু করেছে। জলমগ্ন তিনটি গ্রাম। রাস্তা ছাপিয়ে বইছে জল। আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা। কৃষি জমি জলমগ্ন হওয়ায় মাথায় হাত চাষিদের। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। 

২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও জল নামেনি। যেনন পাতিপুকুর আন্ডারপাসে এখনও গভীর জল। এখনও জলে আটকে রয়েছে বেসরকারি বাস। ফলে একদিকের লেন দিয়ে যান চলাচল করছে। এলাকায় যানজট। কৈখালির কাছে নিউটাউনমুখী ভিআইপি রোড এখনও জলমগ্ন। ফুটপাথেও জল। অন্যদিকে জলমগ্ন কামারহাটির প্রসাদনগরের কাছে বিটি রোডের কলকাতামুখী রাস্তা। জল জমে থাকায় ওই রাস্তায় ধীর গতিতে যান চলাচল করছে। কামারহাটির ফিডার রোডও জলমগ্ন। পুরসভার সাফাই কর্মীদের দাবি, রাস্তায় প্লাস্টিক ফেলায়, নিকাশি নালার মুখ আটকে যাচ্ছে। সেই কারণেই নিকাশি বুজে তৈরি হচ্ছে জল জমার সমস্যা। জলে ভাসছে আড়িয়াদহের বিন্ধ্যবাসিনীতলা। রাস্তা জলমগ্ন। বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে। নাজেহাল স্থানীয় বাসিন্দারা। 

এরই মধ্যে যদি আবারও বৃষ্টি নামে তবে দুর্গতির শেষ থাকবে না, বলেই মনে করছে সাধারণ মানুষ।