ইলেকশনের সময় টাকা খাইয়ে ঘটনা সাজিয়ে সব ঢঙ হচ্ছে বলে আজ মন্তব্য করেছেন তিনি। গতকাল তিনি বলেছিলেন, সব সংসারেই কিছু না কিছু ঘটে থাকে। মায়ের পাঁচটা ছেলে থাকলে এক আধটা দুষ্টু হয়।
বিরোধীদের দাবি, মমতার পর পর দু’দিনের এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, তিনি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে স্টিং-ফুটেজে যা দেখা গিয়েছে, তা সত্যি। অর্থাৎ নেতারা টাকা নিয়েছেন। মমতার মন্তব্য এই কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, দু’দিন আগে মুকুল রায়ের মন্তব্য শুনে অনেকেই দাবি করেছিলেন যে, মমতা নির্দিষ্ট করে কয়েকজনের ঘাড়ে বিষয়টি চাপাতে চাইলেও মুকুল আবার কৌশলে গোটা বিষয়টি দলের ঘাড়ে চাপাতে চান! তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতিকে কয়েকদিন আগে বলতে শোনা যায়, এটা আমি অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে বলে যেতে চাই, যাঁদের ছবি দেখছেন, তাঁরা কেউ ব্যক্তিগত কাজে, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজের সুবিধের জন্য এক পয়সা খরচ করেনি।
মুকুল কি তাহলে মমতার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন, রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্নের আবহেই মমতা সাফ বুঝিয়ে দিলেন, তিনি নিজের পুরনো অবস্থানেই অনড় আছেন। অর্থাৎ, দুষ্টুমি করেছে এক আধজন। যে তত্ত্বের উপর ভর করেই সম্ভবত কয়েকদিন আগে তিনি বলেছিলেন, প্রার্থী ঘোষণার আগে দেখলে আমি নিশ্চয় ভাবতাম, এখন সম্ভব নয়।
সংবাদপত্র ‘এবেলা’য় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, মমতা যা করেছেন, তা মোটেও নেত্রীসুলভ নয়। ঘরের ভিতর তিনি বলতেই পারতেন, কিন্তু প্রকাশ্যে এভাবে দায় ঝেড়ে ফেলাটা উচিত হয়নি। এদিকে, ‘এবেলা’-তেই প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার ব্যক্তিগত স্তরে ওই নেতাদের মমতা এই মর্মে বার্তা পাঠিয়েছেন যে, তিনি মুখে ফস্কে ও কথা বলে ফেলেছেন।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, মমতা নিজের ভাবমূর্তি বাঁচাতেই প্রকাশ্যে স্টিং-বিদ্ধদের থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছেন। তাই ঘুরেফিরে স্বীকার করে নিচ্ছেন স্টিং-এর সত্যতা।, যাতে ভবানীপুরে এর আঁচ না পড়ে। আবার পুরোপুরি দূরত্ব তৈরি করলে তা বিরোধীদের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে কিংবা দলের অন্দরে ভোটের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হতে পারে, তাই কৌশলে মাঝেমধ্যে তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দিচ্ছেন।