কলকাতা: নারদাকাণ্ডে ঢুকে পড়ল সিবিআই। দিল্লি থেকে স্টিং ফুটেজ আনতে হাইকোর্টের নির্দেশে ৩ সদস্যের কমিটিতে রাখা হয়েছে একজন সিবিআই কর্তাকে। স্বাগত জানিয়েছেন নারদ নিউজের সম্পাদক।

সোমবার তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশে প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর বলেন,

কমিটিতে প্রথম সদস্য হিসাবে আইজি পদমর্যাদার একজন অফিসারকে নিয়োগ করবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি।

দ্বিতীয় সদস্য হিসাবে সিবিআইয়ের কলকাতা-অফিসের ডিআইজি হয় নিজে কমিটিতে থাকবেন, নয়তো কোনও আধিকারিককে নিয়োগ করবেন।

তৃতীয় সদস্য সদস্য হিসাবে কমিটিতে থাকবেন কলকাতা হাইকোর্টের একজন পদস্থ আধিকারিক।

প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর বলেন,

এই অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে গোটা ব্যবস্থার উপর বড়সড় প্রভাব পড়বে।

হাইকোর্টের নির্দেশ,

তিন সদস্যের এই কমিটি দিল্লি গিয়ে, নারদ নিউজের সিইও ম্যাথ্যু স্যামুয়েলের কাছ থেকে স্টিং অপারেশনের অসম্পাদিত ফুটেজ এবং যে যন্ত্র দিয়ে স্টিং অপারেশনটি করা হয়েছে, সেটি নিয়ে আসবে। ফুটেজ দেখার পর, আদালত ঠিক করবে তা কার হেফাজতে থাকবে।

হাইকোর্টের তৈরি কমিটির হাতে ফুটেজ তুলে দিতে প্রস্তুত নারদ নিউজের সিইও এবং সম্পাদক ম্যাথ্যু স্যামুয়েল।

আদালতে সিবিআইয়ের নাম ওঠার আগেই, শুক্রবার মামলার শুনানি চলাকালীন, নিজে থেকেই সিবিআই-তদন্তে আপত্তি জানান অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা- নেত্রীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তো দিল্লিতে সিবিআইয়ের দফতরে ফুটেজ-হস্তান্তরেও আপত্তি করেন তিনি। বলেন,

কমিটি দিল্লি থেকে ফুটেজ নিয়ে আসুক, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু, সিবিআইয়ের দফতরে হস্তান্তর করার কী দরকার?

পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, স্টিং অপারেশনের ফুটেজ দিল্লি থেকে আনার জন্য যেভাবে হাইকোর্ট, কমিটিতে একজন সিবিআই আধিকারিক নিয়োগের নির্দেশ দিল তা যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ। কারণ, এতেই স্পষ্ট হয়ে গেল, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা কতটুকু।

এরই মাঝে, এদিন আদালতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে! আদালত সূত্রে খবর, বিকাশের উদ্দেশে কল্যাণ বলেন,

গত ৩৪ বছরে আপনারা কী করেছেন, আমরা জানি। আপনার হাতে তো এখনও রক্তের দাগ রয়েছে। আপনি তো পাঁচ বছর মেয়রও ছিলেন। তারপর আর ভোটে দাঁড়ানোর সাহস দেখাননি কেন? আপনি কী করেছেন, আপনি নিজেও জানেন।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন আক্রমণের মুখে পড়েও অবশ্য প্রতি আক্রমণের পথে হাঁটেননি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

সৌভিক মজুমদার ও বিজেন্দ্র সিংহ, এবিপি আনন্দ