মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভরতপুর: চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে শিকেয় পরিষেবা। বেহাল দশা পূর্ব বর্ধমানের ভরতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। রাত নামলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়ে উঠছে দুষ্কৃতীদের আস্তানা। চরম সমস্যার মুখে স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।


এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের বোতল। জানলা-দরজা থেকে লোহার গ্রিল, তাও চুরি হয়ে গিয়েছে। এমনই অবস্থা পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের ভরতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, দিনে স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলেও, রাতে তা চেহারা নেয় সমাজবিরোধীদের আখড়ার। শুধু তাই নয়। এই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিত্সক বা নার্স কেউ-ই নেই।  এক কম্পাউন্ডার ও তাঁর সহযোগীর ভরসায় চলছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।  


দিনের পর দিন যায়, আশ্বাসই সার। কবে বদলাবে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশার এই ছবি? সমস্যায় পড়লে হাতের কাছেই কবে মিলবে চিকিৎসক? পূর্ব বর্ধমানের ভরতপুরের বাসিন্দা রঘুনাথ মেটে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে চিকিৎসক নেই। সরকারি কম্পাউন্ডারের সঙ্গে স্থানীয় একজন  চিকিৎসায় সাহায্য করেন। এখানে ডাক্তার একদিন মাত্র আসেন। মদ জুয়ার আসর বসে। চালু থাকলে এমন হত না। কোনও সমস্যা হলে ৩০ কিমি দূরের পূর্ব বর্ধমানের হাসপাতালে অথবা পশ্চিম বর্ধমানের ২০ কিমি দূরে ছুটতে হয় আমাদের।


ভরতপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কম্পাউন্ডার অমিত টুডু বলেন, এখানে জানলা-দরজা চুরি হয়ে যাচ্ছে। রাতে মদের আসর বসে। চিকিৎসক নার্সিং স্টাফ দিলে ভাল হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল পরিষেবার কথা স্বীকার করে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনও। পূর্ব বর্ধমানের চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ২০১৮ থেকে একই অবস্থা চলছে। ওপরমহলে জানিয়েছি। সরকারি আধিকারিকরা দেখেও গেছিলেন। কিন্তু কিছু হয়নি এখও। এখানে চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ নেই। আমি ফের জানাব। রাতে কেউ না থাকার কারণে এখানে চুরি হয়।


গলসি ১ নম্বর ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ফারুক হোসেন বলেন, “ওখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নার্সিং স্টাফ ও চিকিৎসক নেই জানি। বিডিও সহ সকলকেই সমস্যার কথা জানানো আছে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।“