কলকাতা ও গুড়াপ:  কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল সঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যর গাড়ির? পুলিশের পাশাপাশি ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদেরও অনুমান, চালকের ঘুমিয়ে পড়ার ফলেই ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমত প্রায় ১০ ফুট লম্বা লোহার ফেন্সিং ভেঙে কালভার্টে ধাক্কা মেরে নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে কালিকাপ্রসাদের গাড়ি। তদন্তকারীদের দাবি, ফেন্সিং ভাঙার সময় চালক ব্রেক কষলে রাস্তায় চাকার স্কিড মার্ক থাকত। কিন্তু তা নেই। তার মানে, ফেন্সিং-এ ধাক্কা লাগা বুঝতেই পারেননি চালক অর্ণব রাউত। পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আসলে তখন ঘুমিয়ে ছিলেন চালক। তাই পা দিতে পারেননি ব্রেকে। যদিও চালকের দাবি, তিনি ঘুমিয়ে পড়েননি।
দ্বিতীয়ত, লোহার ফেন্সিং-এর গায়ে লম্বা আঁচড়ের দাগ দেখে তদন্তকারীদের অমুমান, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় ক্রমাগত ধাক্কা মেরেছেন ১০ফুট লোহার ফেন্সিং-এ। তাই টানা আঁচড়ের দাগ পড়েছে। চালক ব্রেক করলে গাড়ি বা ফেন্সিং-এ আঁচড়ের দাগ টানা পড়ত না। যদিও চালকের দাবি, ওভারটেক করে যাওয়া লরির পিছনের অংশে ধাক্কা লেগেই দুর্ঘটনা। বলেন, আমি মাঝখানের লেনে ছিলাম। পিছনে একটা ট্রাক জোরে আসছিল। ট্রাকের কন্টেনারে লাগে আমার গাড়ি। জলে পড়ে যায়। চালকের এই দাবিও বিশ্বাস করছেন না তদন্তকারীরা।
তৃতীয়ত, পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে মেলেনি অন্য কোনও গাড়ির ধাক্কা লাগার চিহ্ন। জল থেকে গাড়িটি তোলার পর দেখা যায় সামনের দুর্ঘটনার তীব্রতায় সামনের একটি চাকা খুলে গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল গাড়িটি। যদিও চালকের দাবি অন্য। তাঁর দাবি, গাড়িটা ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে যাচ্ছিল। ধাক্কা লাগায় প্রথমে একটা চাকা রেলিং-এ উঠে যায়। আমি কন্ট্রোল করতে পারিনি।
কিন্তু তদন্তকারীদের বক্তব্য, গাড়ির বেগ ৫০-৬০ কিলোমিটার হলে তো ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা চালকের সামলে নেওয়ার কথা। ব্রেক করার কথা। কিন্তু ব্রেক করার কোনও চিহ্ন নেই। তাই চালক সত্যি বলছেন বলে মনে করছেন না তদন্তকারীরা।
দুর্ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি কালিকাপ্রসাদের পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ দায়ের না করলে, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জোগাড় করা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হবে।


এদিকে এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে ওই গাড়ির চালক কী বললেন শুনুন