সুদীপ চক্রবর্তী, ইটাহার: দীর্ঘদিন ধরে নদীর উপর সেতু তৈরির আবেদন করেও হয়নি সুরাহা। বাধ্য হয়ে ইটাহারের সুঁই নদীর উপর অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন ২৮টি গ্রামের বাসিন্দা। চাঁদা তুলে চলছে সাঁকো তৈরির খরচ জোগাড়ের কাজ। শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা।


একদিকে কাপাসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। অন্যদিকে মারনাই গ্রাম পঞ্চায়েত। মাঝে বয়ে চলেছে সুঁই নদী। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া হোক বা অফিস যাত্রী, অথবা মুমূর্ষু রোগী, বছরের ৩৬৫ দিনই নদী পারাপারের ভরসা বলতে নৌকা। সেতু না থাকায় দুই পঞ্চায়েতের ২৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের এভাবেই করতে হয় ঝুঁকির পারাপার।উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের সুঁই নদীর উপর সেতু তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের।স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনের কাছে সেতু তৈরির আবেদন জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এবার তাই নিজেরাই চাঁদা তুলে উদ্যোগ নিয়েছে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরির।


কল্যাণীতে হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার মৃতদেহ, ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়


নিজেদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইটাহারের মারনাইয়ের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের কথায়, “আমার দিদি সন্তানসম্ভবা ছিলেন। সেতুর অভাবে নৌকায় নদী পার করে হাসপাতালে যেতে দেরি হওয়ায় মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে চাঁদা তুলে সাঁকো তৈরি করছি।’’ আরেক বাসিন্দা ওয়াহিদুর রহমানর অভিযোগ, “প্রতি বছর ইলেকশন আসে। নেতামন্ত্রীরা আশ্বাস দেন। কিন্তু কাজ হয় না। তাই বাধ্য হয়েই নিজেরা চাঁদা তুলে সাঁকো বানাচ্ছি।’’


ইয়াসের দগদগে ক্ষতর মধ্যেই সুন্দরবনে নতুন বিপদ নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টি


গ্রামের মানুষ নিজেরাই সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়ায় শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। আপাতত অস্থায়ী সেতু বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক। ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন বলেন, “কচুয়া ঘাটে একটি সেতু তৈরির খুব প্রয়োজন আছে। আমরা এখানে সেতু তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। চাঁদা তোলার প্রয়োজন নেই। আপাতত অস্থায়ীভাবে আমরা স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেব।’’


পাল্টা বিজেপির দাবি, সাংসদ তহবিলের অর্থ থেকেই সেতু বানিয়ে দেওয়া হবে। জেলা বিজেপি সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, “১০ বছর ধরে এখানে তৃণমূল ক্ষমতায় আছে। তাও এরা কিছু করেনি। করার ইচ্ছে থাকলে আগেই করতে পারত। এখন যা করার আমাদের সাংসদই করবেন। সাংসদ কোটার টাকা দিয়ে সেতু তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি।’’ ভরা বর্ষায় উত্তাল নদীর উপর দিয়ে ঝুঁকির পারাপারে এই সমস্যার সমাধান কবে হবে, সেদিকেই তাকিয়ে দু’পারের ২৮টি গ্রামের বাসিন্দারা।