কলকাতা: তৃণমূলে ফেরার জল্পনা উস্কে এবার কুণাল ঘোষের বাড়িতে হাজির রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর দুজনই জানালেন, এটা নিহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ। এদিকে, সব্যসাচী দত্তকে নিয়েও চর্চা শুরু হতেই নিজের অনমনীয় মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সুজিত বসু। অন্যদিকে এই প্রেক্ষাপটে শনিবার কুণাল ঘোষ ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছে আরেক তৃণমূল সাংসদের গলায়।


এ প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'এতদিন কোনও সাক্ষাত্‍ হল না, এখন সৌজন্য সাক্ষাত্‍? আমরা কি কিছু বুঝি না?' অন্যদিকে নাম না করে রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে ট্যুইট করেছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনুপম হাজরা। তিনি বলেছেন, 'প্রত্যাশা মতো চার্টার্ড ফ্লাইটের একজন রয়্যাল প্যাসেঞ্জার আজ অন্য দেশে ল্যান্ড করলেন। বাকি রয়্যাল প্যাসেঞ্জারদের সন্ধান চলছে।'


রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার জল্পনার মধ্যেই, চর্চায় মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সব্যসাচী দত্তও। কিছুদিন আগেই দলের বিপর্যয়ের জন্য, ভোটপ্রচারে হিন্দিভাষী নেতাদের দাপটকেই কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত। তিনি বলেন, অন্য ভাষার লোকেদের হয়তো বাংলার মানুষ সে ভাবে নিতে পারেনি।


মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় সেই জল্পনা আরও জোরাল হয়েছে। কারণ রাজনীতির ময়দানে মুকুলের সঙ্গে সব্যসাচীর সখ্য বহুদিনের। কিন্তু তাঁর তৃণমূলের ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হতেই অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন সব্যসাচীর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।


দমকলমন্ত্রী ও  বিধায়ক, সুজিত বসু জানিয়েছেন, 'সব্যসাচীর প্রতি কেন নমনীয় হব, দল যদি ব্যক্তিগত মত জানতে চায় তাহলে যা বলার বলব। এখন মুকুল রায়ের পর আর কারা পুরনো দলে ফিরবেন, তা জানা যাবে ভবিষ্যতে।'


শুক্রবার তৃণমূলে ফিরেছেন মুকুল রায়। এরপর কে? এ নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে যখন জোর জল্পনা, ঠিক সেই মুহূর্তে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বাড়িতে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে পৌঁছে গেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সন্ধেয় দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। চা, ফিস ফ্রাইও খাওয়া হল। তাহলে কি তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হচ্ছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যয়েরও? যদিও দায় ঝেড়ে কুণাল জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনও কথা হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যা নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নেবেন।


বিধানসভা ভোটের আগে চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লি গিয়ে অমিত শাহর উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোটে ভরাডুবির পর সেই রাজীবই সোশাল মিডিয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন। কিন্তু এরপর থেকেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কখনও নাম করে, কখনও না করে পোস্টার পড়তে শুরু করে। সবমিলিয়ে মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি।