নদিয়া:  নদিয়ায় অশীতিপর মা-বাবাকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে। অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি এখন কোনওমতে মাথা গুঁজেছেন এক নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলায়। ছেলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা।


যাঁকে পৃথিবীতে এনেছেন, সেই ছেলেই বুড়ো বয়সে গায়ে হাত তুলেছে। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়িছাড়া করেছে। শেষ বয়সে এসে এই আঘাত কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না বৃদ্ধ মা-বাবার মন। বাঁধ মানছে না চোখের জল।

সন্তান আছে, নিজের বাড়ি আছে। কিন্তু, তা-ও অসহায় বৃদ্ধ দম্পতিকে কার্যত ঘুরতে হচ্ছে রাস্তায় রাস্তায়।

শীতের মধ্যে আশ্রয় নিতে হচ্ছে দরজা-জানলাহীন এক নির্মীয়মাণ বাড়িতে। সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় দিন কাটছে অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির

নদিয়ার ধানতলা থানার বড়গড়িয়া কলোনির বাসিন্দা, ৮২ বছরের কৃষ্ণকান্ত বাড়ুই এবং তাঁর স্ত্রী সবিতা বাড়ুই।

তাঁদের দাবি, সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে সাত বছর আগে তাঁরা একটি জমি কেনেন। সেখানে তৈরি করেন একটি বাড়ি।

কিন্তু, কয়েকবছরের মধ্যে আইনি কারসাজি করে সেই জমি আবার নতুন করে কেনেন বৃদ্ধ কৃষ্ণকান্তর ছেলে দীপক।

অভিযোগ, এরপরই অশীতিপর মা-বাবার ওপর অত্যাচার শুরু করেন ছেলে-বউমা। মারধর করে বৃদ্ধ মা-বাবাকে তাঁরা বাড়ি থেকে বার করে দেন।

প্রথমে বৃদ্ধ দম্পতিকে আশ্রয় দেন নেপাল বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। কিন্তু, সেজন্য নেপাল বিশ্বাসকে হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

তারপর থেকে বাধ্য হয়ে এই নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলায় আশ্রয় নিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি।

কোনও দরজা-জানলা নেই। হু হু করে ঢোকে ঠান্ডা হাওয়া। তার মধ্যেই মশারি টাঙিয়ে, গুটিসুটি মেরে কোনওমতে পড়ে রয়েছেন তাঁরা।

ছেলে অবশ্য মা-বাবার তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযুক্ত ছেলের দাবি, এরা যা বলছে সব মিথ্যে। শ্বশুরবাড়ির টাকা দিয়ে জমি কিনেছি।রানাঘাটের মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে এক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃদ্ধ দম্পতি ধানতলা থানা থেকে মহকুমাশাসক পর্যন্ত সব জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছেন।