সোনারপুর: সোনারপুর ভয়াবহ ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় আরও এক ‘ফিমেল-কানেকশন’! নাম: কোহিনূর বিবি। বাড়ি: বারুইপুর। পুলিশ সূত্রে দাবি, এই মহিলাও ডাকাতির চিত্রনাট্যে সামিল ছিল!


মঙ্গলবার রাতে বাসন্তী থেকে গ্রেফতার করা হয় বছর চল্লিশের এই গৃহবধূকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, শনিবার রাতে একটি ব্যাগে করে অস্ত্র ও বোমা নিয়ে বারুইপুর থেকে বাসন্তী যায় কোহিনূর! সেগুলি দুষ্কৃতীদের হাতে তুলে দেয় সে! আর পরদিন সন্ধেয় তা দিয়েই, সোনারপুরের সোনার দোকানে অপারেশন চালায় দুষ্কৃতীরা! প্রথমে অবাধে লুঠপাট। তারপর পালানোয় বাধা পেয়ে সোনার দোকানের মালিককে খুন!

কিন্তু কীভাবে অভিযুক্ত মহিলার খোঁজ পেলেন তদন্তকারীরা? পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃত লাবলু সর্দারকে জেরা করে উঠে আসে কোহিনূরের নাম! লাবলু জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে দলের এক সদস্যের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কোহিনূর। সেই সূত্রেই তার অপরাধ জগতে প্রবেশ! এরপর ধীরে ধীরে হয়ে ওঠা ডাকাতদলের আশ্রয়দাতা! তবে শুধু দুষ্কৃতীদের সেফ শেল্টার দেওয়াই নয়! পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, ডাকাতদের সব অস্ত্র মজুত রাখার জন্য বারুইপুরে নিজের গোটা বাড়িটাই ছেড়ে দিয়েছিল কোহিনূর! তার বাড়িকেই ডাকাতরা অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করত! এর আগে, শহরতলিতে একাধিক ডাকাতির ঘটনায়, কোহিনূরই অস্ত্র পৌঁছে দিয়েছিল দুষ্কৃতীদের কাছে!

তদন্তকারীদের অনুমান, সীমান্তে তল্লাশির মুখে পড়ার আশঙ্কাতেই কোহিনূরের বাড়িতে অস্ত্র রাখত ডাকাতরা! এবারও তাদের পরিকল্পনা ছিল, সোনার দোকানে লুঠের পর কোহিনূরের বাড়িতে অস্ত্র রেখে, তারা সীমান্তে পেরিয়ে বাংলাদেশ চলে যাবে!

কিন্তু সতর্ক রয়েছে পুলিশও। দক্ষিণ ২৪ পরগণার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বিএসএফের কাছে তাদের ছবি পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের যে হাত রয়েছে, সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা! পুলিশের অনুমান, সোনারপুরে ডাকাতির মূল চক্রী কাশেম। বাংলাদেশে জন্ম হলেও, ভারতই ছিল তার অপারেশনের জায়গা! গত দু’বছরে এদেশে কাশেমের নামে অন্তত ৭টি ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। তারকেশ্বর থানায় তার নামে রয়েছে জাল নোটের মামলা। বাসন্তী থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে কাশেমের বিরুদ্ধে। সোনারপুরের ঘটনায় ২ মহিলা-সহ চার জন ধরা পড়লেও এই কাশেম এখনও অধরা।