পঞ্চায়েত নির্বাচনের নতুন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে চূড়ান্ত অশান্তির মধ্যেই আদালতে যায় বঙ্গ বিজেপি। সুপ্রিম কোর্ট হয়ে মামলা ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টে। শুনানি চলে দীর্ঘসময় ধরে। শেষপর্যন্ত শুক্রবার রায় দিল সিঙ্গল বেঞ্চ। ৩৫ পাতার নির্দেশনামায় উল্লেখ,আদালতে বিজেপির পক্ষ থেকে যে মামলা করা হয়েছিল, তা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন বিচারপতি।তাই মনোনয়নের জন্য নতুন দিন ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী,মনোনয়ন পর্বে দিকে দিকে অশান্তির জেরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন জমার জন্য আরও একটি দিন বাড়ায়। তা নিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে, যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেটিও গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে আদালত।
কিন্তু, চিঠিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের জন্য যে যুক্তি রাজ্য সরকার দিয়েছিল, সেগুলি খারিজ করে দেন বিচারপতি।
৯ এপ্রিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মনোনয়নের জন্য আরও একটি দিন বাড়ানো হয়। রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদলে ১০ এপ্রিল নতুন বিবৃতি জারি করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। সেই বিজ্ঞপ্তিও এদিন খারিজ করে দেয় আদালত।
এদিন মনোনয়নের বিজ্ঞপ্তি-প্রত্যাহার করে কমিশনের ‘ডিগবাজি’-কে একহাত নেয় আদালত। বেঞ্চ বলে, মনোনয়নের সময় বৃদ্ধির নির্দেশিকায় সুপ্রিম কোর্টের উল্লেখ। প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না থাকার উল্লেখ। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বাস্তব পরিস্থিতিতে কী ঘটছে, সেই সম্পর্কে অবহিত ছিল নির্বাচন কমিশন। কমিশন ভুল কাজ করলে দর্শক হয়ে থাকতে পারে না কোর্ট। চোখ বন্ধ করেও থাকতে পারে না আদালত। কমিশনের কাজ দেখে মনে হচ্ছে না তারা সাংবিধানিক সংস্থা। কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগের ভিত্তিতে মন্তব্য হাইকোর্টের। সরকার এবং সমস্ত দলের সঙ্গে কথা বলে নয়া বিজ্ঞপ্তি। মনোনয়নের সময়বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেই বিজ্ঞপ্তি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ হাইকোর্টের।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও তৃণমূলকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও, বিরোধীদের বিঁধতে ছাড়েননি তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন,সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল ডিভিশন বেঞ্চে যাবে না। কয়েকটি আবেদন আদালত খারিজ করেছে ঠিকই, তবে সবমিলিয়ে তাঁরা খুশি। এদিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের বক্তব্য, আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।