কলকাতা: মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন আপাতত বাড়ার কোনও ইঙ্গিত নেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে! এই প্রেক্ষাপটে বিরোধীরা দাবি করছে, মনোনয়ন পর্বে যেভাবে বাধা দিয়েছে শাসক দল, তাতে পঞ্চায়েত ভোট প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়! গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিলের ছবিটাও খুব একটা ভাল নয়! রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে ,পশ্চিমবঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার ৬৫০টি আসন রয়েছে। এর জন্য শাসক তৃণমূল ৫৯ হাজার ৪৭৫ টি মনোনয়ন দাখিল করেছে। অর্থাৎ মোট আসনের চেয়েও বেশি। অথচ, দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপি মাত্র ২৭ হাজার ৭৮৯টি মনোনয়ন দাখিল করতে পেরেছে। চার বাম দল মিলিয়ে ১৯ হাজার ৭১৪টি এবং কংগ্রেস মাত্র সাত হাজার ২৩৯টি মনোনয়ন দাখিল করতে পেরেছে।
বিরোধীদের দাবি, এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে জেলায় জেলায় বিডিও অফিসের বাইরে সশস্ত্র পাহারাদার দাড় করিয়ে রেখে কীভাবে তাদের মনোনয়ন দিতে আটকেছে তৃণমূল। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, সাংগঠনিক জোর নেই বলেই প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা, আর নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলায় পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ২১৭টি আসন রয়েছে। এর জন্য তৃণমূল ১২ হাজার ৩৪৩টি মনোনয়ন দাখিল করেছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও মোট আসনের চেয়ে বেশি।
বিজেপি মাত্র পাঁচ হাজার ৯৫২টি মনোনয়ন দাখিল করতে পেরেছে।চার বাম দল মিলিয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে মাত্র ৪৮০৩টি মনোনয়ন দাখিল করেছে।কংগ্রেস আরও কম মাত্র ১ হাজার ৬৪৬টি মনোনয়ন দাখিল করতে সক্ষম হয়েছে।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনের জন্য তৃণমূল ১ হাজার ৬৬টি মনোনয়ন দাখিল করেছে।
বিজেপি ৭২৬টি মনোনয়ন দাখিল করেছে।চার বাম দল মিলিয়ে ৬৬৫টি এবং কংগ্রেস জেলা পরিষদের জন্য মাত্র ৩৭৭টি মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে।


বিরোধীদের দাবি, জেলা পরিষদের মনোনয়ন যেহেতু মহকুমা শাসকের অফিসে দাখিল করতে হয়, তাই সেখানে অত্যাধিক মাত্রায় সন্ত্রাস করতে পারেনি তৃণমূল, তাই কিছুটা হলেও মনোনয়ন দাখিল করা গিয়েছে। কিন্তু, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে যেহেতু বিডিও অফিসে মনোনয়ন দাখিল করতে হয়, তাই আগেভাগেই তা কব্জা করে রেখে বিরোধীদের আটকেছে শাসক দল। যদিও, তৃণমূলের দাবি, এসবই বিরোধীদের অজুহাত। যেখানে প্রার্থী দিতে পারছে না, সেখানে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে, আর যেখানে প্রার্থী দিতে পারছে, সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে ভোটের আগেই দু’টি জেলা পরিষদ দখল কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছে তৃণমূল।

এরমধ্যে একটি বীরভূম,অপরটি বাঁকুড়া।

বীরভূম জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টিতেই কোনও লড়াই হচ্ছে না।

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ৪৬টি আসনের মধ্যে ২৬টিতেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি।

এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ৮১টি আসনের মধ্যে ২৩টি বিরোধী শূন্য, অর্থাৎ কোনও লড়াই হচ্ছে না।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ৫৮টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে একাই তৃণমূল, কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই।