কলকাতা: হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে আজকের মতো শুনানি শেষ।কাল পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ল। কাল সকাল সাড়ে ১০টায় ফের হাইকোর্টে শুনানি।


হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে পঞ্চায়েত মামলার শুনানি শুরু হয়। শুরুতেই বিচারপতি সুব্রত তালুকদার জানান, দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সওয়াল-জবাবের সময় কমানো হোক। শুধুমাত্র আইনি যুক্তির মধ্যেই সওয়াল সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এছাড়া, কোনও পক্ষই হলফনামা বিনিময় করতে পারবে না বলেও জানিয়ে দেন বিচারপতি।


শুনানির শুরুতেই তৃণমূলের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিরোধীদের সব অভিযোগই যুক্তিহীন। তাঁরা কি পুলিশে কোনও অভিযোগ জানিয়েছিলেন? পুলিশ যে শাসকদলের পুতুল তার কোনও প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে? যাঁরা মার খেয়েছেন বা যাঁদের ভয় দেখানো হয়েছে বলে দাবি, সেইসব ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ কোথায়? আদালতে প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।


কল্যাণের সওয়ালের পাল্টা জবাব দেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। বলেন, ক্রমশ তৃণমূলের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের উপর সবাই হারাচ্ছে আস্থা। ৩১ মার্চ সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল কমিশন। ভোট ঘোষণার কথা জানানো হয়নি সর্বদলীয় বৈঠকে। কিন্তু সেদিনই কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে। মনোনয়নের সময় বৃদ্ধি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারে কমিশনকে চাপ দিয়েছিল তৃণমূল। মনোনয়ন জমার দিন একদিন বাড়লে, কী ক্ষতি হতো? এই অবস্থায় কোর্টের অধিকার আছে হস্তক্ষেপ করার। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে পাল্টা সওয়াল বিকাশ ভট্টাচার্যের।


বিচারপতি কল্যাণের কাছে জানতে চান যে, তিনি বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানার কোনও বাধ্য-বাধ্যকতা হাইকোর্টের নেই। তাহলে আদালত সেই নির্দেশগুলি নিয়ে কীভাবে কাজ করবে। বিচারপতি বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে কমিশন মনোনয়ন পেশের মেয়াদ একদিন বাড়িয়েছিল। পরের দিন তা প্রত্যাহার করে। এর ফলে কোনও ভোটদাতা যদি মনে করেন, কমিশনের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়, কমিশন নিজেদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে বলে মনে করছে, তাহলে সেই অভিযোগের জবাব কে দেবে? এরপর কল্যাণকে উদ্দেশ করে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনার মতে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সবথেকে বড় বিচারক কে হতে পারে?


আদালতে তৃণমূলের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উপযুক্ত কারণ না দেখিয়ে কমিশন কীভাবে মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়াতে পারে? বিচারপতি বলেন, নানা ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কমিশন যদি প্রয়োজনে একবার মেয়াদবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে পরিস্থিতি বিচার করে পৃথক নির্দেশিকার জারির পর আরও একবার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না কেন?