সুনীত হালদার, হাওড়া: করোনা আবহেই হাওড়ার শ্যামপুরে বিষাক্ত মাকড়সার আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই এই মাকড়সার কামড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বুধবার এলাকায় যান বন দফতরের কর্মীরা। নতুন আতঙ্কে ভয়ে কাঁটা গ্রামবাসীরা।


দেখতে মাকড়সার মতো। কিন্তু, আশেপাশের খুদে আটপেয়েদের চেয়ে ধরন অনেকটাই আলাদা। দৈত্যাকার চেহারা। মিশমিশে কালো লোমশ শরীর। এই মাকড়সার আতঙ্কেই এখন ভয়ে কাঁটা হাওড়ার শ্যামপুরের কাটাগাছি মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, গ্রামের একটি পুরনো বাড়ি ভাঙতেই উৎপাত বেড়েছে এদের। দিনে-রাতে হানা দিচ্ছে বাড়িতে। বেশ কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই এই বিষাক্ত মাকড়সার কামড়ের কবলে পড়তে হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। এমনকী, গেছে প্রাণও।


স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সামিউর রহমান জানিয়েছেন, ‘আমার ভাইয়ের এই মাকড়সার কামড়ে কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয়। নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সেখানেই ওর মৃত্যু হয়।’


আড বন দফতরের কর্মীরা কাটাগাছি মণ্ডলপাড়ায় গিয়ে বেশ কয়েকটি মাকড়সাকে জারে বন্দি করে নিয়ে যান। যদিও এগুলি কোন প্রজাতির মাকড়সা, সেটা বলতে পারেননি তাঁরা। 


হাওড়ার বন দফতরের কর্মী শেখ আব্দুল কালাম মোল্লা জানিয়েছেন, ‘আমরা এই মাকসড়সাগুলিকে হেড কোয়ার্টারে পাঠাচ্ছি। আমরা বলতে পারছি না এই মাকড়সাগুলি কোন প্রজাতির।’


পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এদিন কীটনাশক ছড়ানো হয় কাটাগাছি মণ্ডলপাড়ায়। শ্যামপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুলফিকার আলি মোল্লা বলেছেন, ‘কীটনাশক ছড়ানো হয়েছে, মানুষকে আতঙ্কিত হতে বারণ করব।’


বিষাক্ত হলেও, এই মাকড়সার কামড়ে মৃত্যুর বিষয়টি মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। শ্যামপুর সিদ্বেশ্বরী মহাবিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক ধ্রুবচন্দ্র ঢালি জানিয়েছেন, ‘এটা মাকসড়সার প্রজননের সময়। ভয়ের কোনও কারণ নেই। যিনি মারা গেছেন, তাঁর মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে। বিষাক্ত হলেও এই মাকসড়াগুলি পরিবেশবান্ধব।’


করোনার মধ্যেই এবার নতুন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন কাটাগাছি মণ্ডলপাড়ার মানুষজন। 


এর আগেও রাজ্যের একাধিক জায়গায় ট্যারান্টুলা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গলমহলে বিষাক্ত মাকড়সা নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। এবার একই ধরনের ঘটনা হাওড়ায়।