বিশ্বজিৎ দাস, খড়্গপুর: মেয়াদ উত্তীর্ণ আটার প্যাকেট দেওয়ায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ রেশন দোকানে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপালী অঞ্চলের একটি রেশন দোকানে।
আজ গ্রামবাসীরা রেশন নিতে যান। তখন তাঁদের হাতে রেশন দোকানের পক্ষ থেকে একটি বস্তার মধ্যে ভর্তি করে মেয়াদ উত্তীর্ণ আটার প্যাকেট দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বস্তা খুলে গ্রামবাসীরা দেখতে পান, প্রত্যেকটি আটার প্যাকেট ফাটা এবং আটার গায়ে পোকা লেগে রয়েছে। তাই দেখে গ্রামবাসীরা রেশন দোকানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা এবং খড়্গপুর মহকুমা খাদ্য আধিকারিক সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রেশনের ডিলারশিপ বদল করতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল আড়ি বলেছেন, ‘রেশন দোকান থেকে পুরনো মাল দেওয়া হয়েছে। ২০টি আটার প্যাকেট, সব প্যাকেটই ছেঁড়া। আটায় পোকা ছিল। আমাদের অন্ত্যোদয় যোজনার আটটি কার্ড আছে। ৩১ কিলো চাল ও কুড়ি প্যাকেট আটা দিয়েছে। গতবার আমার আটটি কার্ডে ১৫ কিলো চাল দিয়েছিল। রেশন দোকানের বাইরে কোনও বোর্ড লাগানো নেই। আমরা জানব কী করে কী কী মাল, কত পরিমাণে পাব? আমরা গরিব মানুষ, এতকিছু কী করে জানব? সরকার এত মালপত্র পাঠাচ্ছে আর এখানে ব্যবসা হচ্ছে।’
মৃত্যুঞ্জয় দাস নামে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, ‘এর আগেরবার আমার বাড়িতে দু’কিলো করে কম দিয়েছিল প্রতি কার্ডে। এর আগেরবারও আমরাই ঝামেলা করেছিলাম। তখন থানার ওসি এসে ওঁকে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলেছিলেন, ভুল হয়ে গেছে। আজ ওঁকে ফোন করা হয়েছিল। উনি বললেন, ভুল হয়ে গেছে। আজ একজন রেশন নিয়ে বেরিয়ে বস্তাটা যখন খুলে দেখেন, তখন দেখতে পান আটার সব প্যাকেটই ফাটা। এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে গেছে। আটায় পোকা হয়ে গেছে। যে আটা গরু-ছাগলও খাবে না, সেই আটা মানুষকে দিচ্ছে। এছাড়া পরিমাণেও কম দিচ্ছে। আটটি কার্ডের জায়গায় সাতটি কার্ডের জিনিস দিচ্ছে। আমাদের দাবি, এই ডিলারশিপ বদল করা হোক। বারবার এই ডিলার চুরি করে যাচ্ছে।’
অভিযুক্ত রেশন ডিলার সমরেশ ভঞ্জর দাবি, ‘আমি ডিস্ট্রিবিউটর, গোডাউন থেকে যে ধরনের মাল পেয়েছি তাই দিয়েছি। যেটা ভুল হয়েছে ওটা টেকনিক্যাল ভুল। গত মাস পর্যন্ত আরসি নট ইনক্লুডেড ছিল। পরে ইনক্লুডেড হয়। যিনি আটা নিতে এসেছিলেন, তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। উনি আমাদের বলেননি আটটি কার্ড পেয়েছেন। গত মাস পর্যন্ত উনি সাতটি কার্ডে যাবতীয় সামগ্রী পেয়েছেন। আরসি ইনক্লুডিং হওয়ার পর একটি কার্ডের জিনিসপত্র বেড়েছে, কিন্তু সেটা তো আমাদের জানাতে হবে।’
এ বিষয়ে খড়গপুর মহাকুমা খাদ্য আধিকারিক অভিজিৎ বেজ জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ পেয়ে এখানে এসেছি, তদন্ত করছি।’