কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, আশাবুল হোসেন ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: একই দিনে বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালেন তৃণমূল ছেড়ে দলে আসা তিন হেভিওয়েট। একজন বিজেপির বৈঠক থেকে বেরিয়েই দলীয় কৌশলের সমালোচনায় সরব হলেন। একজন বৈঠকে না এসে জল্পনা বাড়ালেন। আর একজন বৈঠকে না এসে দলের বিরুদ্ধে কার্যত তোপ দাগলেন।


বিধানসভা ভোটের আগে চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লি নিয়ে গিয়ে অমিত শাহের বাসভবনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে নিয়েছিল বিজেপি। ভোটে দলের ভরাডুবি এবং নিজের হারের পর সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজীব। শুভেন্দু অধিকারী যখন দিল্লিতে দাবি করছেন, ‘বাংলায় ৩৫৬-র চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি’, তখন তাঁরই সতীর্থ রাজীব ফেসবুকে লিখলেন, ‘সমালোচনা তো অনেক হল...মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না।’


এরপর রাজীব আরও লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’


এবিপি আনন্দকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় রাজীব জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাংলা ভালভাবে নেয়নি। উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রচারও মানুষ ভালভাবে গ্রহণ করেননি। প্রথম থেকে এর বিরোধিতা করলেও কেউ শোনেনি।’


সম্প্রতি দলের একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে এবং দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে যে সৌমিত্র খাঁ জল্পনা বাড়িয়েছিলেন, এদিন তিনি রাজীবকে কটাক্ষ করে ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘৪২ হাজার ভোটে হারার পর মনে পড়ল? বিজেপির ৪২ জনের বেশি কর্মী মারা গেছে, তখন চুপ থাকা মানে শাসক দলকে সমর্থন করা।’


এরপর আরেকটি পোস্ট করে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তাঁর সতীর্থ রাজীবকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘মন্ত্রী হতে পারেননি বলে আবার কি পুরনো দলে ফিরতে ইচ্ছা করছে?’


বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সঙ্গে করে নিয়ে বিধানসভা ভবন থেকে বেরিয়েছিলেন রাজীব। আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন সহায়ক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর দিকে আঙুল তুলেছিলেন। রাজীবও সেই সময় তাঁর সদ্য প্রাক্তন দলকে তুলোধনা করতে ছাড়েননি। এহেন রাজীবই এখন বিজেপির প্রতি বেসুরো! এরই সঙ্গে একাধিক তৃণমূলত্যাগী নেতার মতোই তাঁরও প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ঘিরে জল্পনা জোরাল হল।